কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায়
|

কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় (সর্বশেষ আপডেট)

কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায়, সরকারি চাকরি হতে বরখাস্তের কারণ এবং সাময়িক বরখাস্তের ক্ষেত্রসমূহ, দন্ডপ্রাপ্ত হলে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্তের কারণ ইত্যাদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সকলেই কমবেশি জানতে আগ্রহী। 

কেননা সরকারি চাকরি অনেকের কাছেই স্বপ্নের মতো। এটি শুধু আর্থিক স্থিতি এনে দেয় এমনটা না, বরং সমাজে একটি সম্মানের স্থান খুব সহজেই প্রতিষ্ঠিত করে। আর তাইতো সরকারি চাকরিকে সোনার হরিণের সাথে তুলনা করা হয়।

আরো দেখুনঃ কি কি রোগ থাকলে সরকারি চাকরি হয় না

কি কি কারনে সরকারি চাকরি চলে যায়?

হরহামেশাই আমরা দেখতে পাই সরকারি কর্মচারীরা চাকরিচ্যুত হচ্ছেন অর্থাৎ চাকরি থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্ত হচ্ছেন। আর এজন্যই জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কারণগুলি। সত্যি বলতে– অসদাচরণ, অনৈতিক কার্যক্রম, কর্মদক্ষতার অভাব, কাজের প্রতি অবহেলাসহ আরও অনেক অনেক কারণ রয়েছে সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার পেছনে।  

আর এটা আমরা সবাই জানি– সরকারি চাকরি হলো এমন একটি পেশা, যা সরকারী সংস্থার মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এই চাকরি বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে যেমন: নির্ধারিত বেতন, পেনশন, চিকিৎসা সুবিধা ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তাই একটি চাকরি মানুষের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। 

কেননা চাকরি মানুষের জীবনকে স্বাভাবিকভাবেই সুন্দর করতে সহযোগিতা করে। আর তাই চাকরি টিকিয়ে রাখতে হলে জানতে হবে কিছু নিয়মকানুন। সেই সাথে যদি আপনি সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে এটাও জানতে হবে–মূলত বাছাইকৃত কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায়!

আজকের এই নিবন্ধে আমরা সেই কারণগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব এবং সেইসাথে চাকরি রক্ষার উপায় এবং চাকরি চলে যাওয়ার পর করণীয়তা ও আনুষঙ্গিক আরো কিছু বিষয়াবলী সম্পর্কে জানাবো খুঁটিনাটি। যেগুলো আমার আপনার উভয়ের জীবনের জন্যই কার্যকরী। তাই নিচের পয়েন্ট গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

চাকরি চলে যাওয়ার প্রধান কারণসমূহ

চাকরি চলে যাওয়ার প্রধান কারণ অর্থাৎ সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কিছু কারণ হলো—

অসদাচরণ

বলতে পারেন চাকরি চলে যাওয়ার পেছনের একটি অন্যতম প্রধান কারণ এটি। আর এই অসদাচরণ মূলত বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন: 

  • সহকর্মীদের সাথে মিসবিহেভ করা,
  • উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে দুর্ব্যবহার,
  •  অফিসের নিয়ম কানুন ভঙ্গ। 

অনৈতিক কার্যক্রম

সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার আরেকটি প্রধান ও কমন কারণ অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা। এক কথায়– দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহণ ও প্রদান এবং অন্যান্য অনৈতিক কার্যক্রম সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে একটি। কেননা স্বাভাবিকভাবেই এসব কার্যক্রম প্রতিষ্ঠান ও সমাজের প্রতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর তাই সরকারি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত কেউ যদি এই ধরনের কাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে তাহলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। 

কর্মদক্ষতার অভাব

চাকরিতে গিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। কেননা আপনি যদি একজন নিয়োগকৃত কর্মী হয়েও দায়িত্ব পালন ও কর্মদক্ষতার মান বৃদ্ধি করতে না পারেন তবে চাকরি রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে। বর্তমানে কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় এই পয়েন্টগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে কর্মদক্ষতার অভাব জনিত বিষয়টি। 

যেহেতু নির্দিষ্ট কিছু কাজ সম্পাদনের জন্য আপনাকে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আপনি যদি কর্মদক্ষ তার অভাবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে তার ফল হিসেবে চাকরি হারাতে হবে এটাই স্বাভাবিক। এর জন্য বলতে পারেন কর্মদক্ষতার অভাব থাকলেও চাকরি চলে যায়। 

কাজের প্রতি অবহেলা

সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার বা যে কোনো চাকরি চলে যাওয়ার বিভিন্ন কারণগুলোর মধ্যে আরেকটি পরিচিত কারণ কাজের প্রতি অতিরিক্ত অবহেলা। এজন্যই আলোচনার এই পর্যায়ে পরিচিত কারণ হিসেবে উল্লেখ করছি, কাজের প্রতি মনোযোগের অভাব ও কাজের প্রতি অবহেলা বিষয়টি। মনে রাখবেন এটিও চাকরি চলে যাওয়ার আরেকটি প্রধান কারণ। 

আপনি যদি সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে না পারেন, অফিসের নিয়ম মেনে না চলেন, কাজের প্রতি দায়িত্বশীল না হন তাহলে খুব সহজেই আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। সেটা হোক সরকারি কোনো চাকরি অথবা বেসরকারি চাকরি। এর জন্য কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে এবং অবশ্যই অবশ্যই আপনি যে প্রতিষ্ঠানে বা যে কোম্পানিতে চাকরি করছেন তাদের নির্ধারিত রুলস মেনে চলতে হবে। 

অনুপস্থিতি ও সময়ানুবর্তিতা

নিয়মিত অনুপস্থিত ও দেরীতে আসা চাকরি চলে যাওয়ার আরেকটি কারণ। কেননা এটি অফিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে এবং সহকর্মীদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এজন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে শিখুন। 

অফিসের নিয়ম ভঙ্গ

সরকারি অফিসের নিয়ম ও শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করলেও চাকরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর তাই এটি কেউ সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে তালিকায় রাখতে পারেন। কেননা আপনি যদি অফিসের নিয়ম লংঘন করেন তাহলে সেটা অফিসের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং অন্যদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর জন্য সাময়িক সময়ের জন্য হোক অথবা চিরতরে আপনাকে আপনার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতেই পারে।

কর্মস্থলে নেশা গ্রহণ

অনেক সময় সরকারি চাকরি নিয়োগের সার্কুলারে শর্তাবলের মধ্যে উল্লেখ করা থাকে মাদকাসক্তির বিষয়টি। মাদক সেবন এবং মাদক সেবনে আসক্ততা বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ। এর জন্য অফিসে মাদকদ্রব্য বা অ্যালকোহল গ্রহণ একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। 

তাই আপনি যদি আপনার কর্মস্থলে নেশা গ্রহণ করে থাকেন তাহলেও সাময়িক সময়ের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করুন। 

অসদাচরণের শাস্তি

মূলত দণ্ড প্রাপ্ত হলে সরকারি চাকরি থেকে দরখাস্ত করা হয়। আমরা সবাই জানি, অসদাচরণের জন্য প্রযোজ্য শাস্তি রয়েছে, আর এই শাস্তি সকলের জন্যই প্রযোজ্য।  তো আপনি যদি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকেন এবং কোন কারনে দন্ডপ্রাপ্ত হন তাহলে এটিও সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

স্বাস্থ্যজনিত কারণ

দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা বা শারীরিক অসক্ষমতা আরেকটি কারণ চাকরি চলে যাওয়ার পেছনে। তাই বলবো কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় এর উত্তর হচ্ছে স্বাস্থ্যজনিত কারণ। কেননা জটিল অসুস্থতা কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত উপস্থিতি ও কাজের মানের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্য চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয় কর্মকর্তাকে। 

কিন্তু কি কি রোগ থাকলে সরকারি চাকরি হয় না অথবা স্বাস্থ্যজনিত কোন কোন জটিল রোগের কারণে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়ে থাকে সেটা যদি আপনি বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আরও একটি পোস্ট পড়ুন। 

ব্যক্তিগত কারণ

চাকরি চলে যাওয়ার পেছনের আনুষঙ্গিক কারণ গুলোর মধ্যে আরও একটি কারণ হলো পারিবারিক সমস্যা, মানসিক চাপ ও ব্যক্তিগত কারণ। কেননা এগুলো স্বাভাবিকভাবে কাজের উপর প্রভাব ফেলে এবং কর্মদক্ষতার অভাব সৃষ্টি করে। এজন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় অনেক সময়। পাশাপাশি আর ও কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে। 

  • অবসর গ্রহণ 
  • প্রশাসনিক সংস্কার 
  • জালিয়াতি সহ প্রভৃতি। 

এখন আসুন আরো জেনে নেই– সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্তের কারণসমূহ বা ক্ষেত্র সমূহ। 

চাকরি থেকে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্তের কারণ | দণ্ডপ্রাপ্ত হলে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্তের কারণ 

কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় এ প্রশ্নের উত্তরে আমরা বেশ কয়েকটি বেসিক কারণ সংযুক্ত করেছি। তবে আরও জেনে নেওয়া জরুরী সাময়িক বরখাস্তের ক্ষেত্র সমূহ সম্পর্কে। কেননা নিম্ন বর্ণিত এই দশটি কারণে সরকারি কর্মচারী বা বেসরকারি অথবা কোম্পানিতে চাকরি রত কর্মচারীদের কে সাময়িক সময়ের জন্য চাকরিচ্যুত করা হয়ে থাকে অর্থাৎ বহিষ্কার করা হয়। উক্ত কারণগুলো হলো —

  • ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইন সংগত আদেশ অমান্য করা 
  • প্রতিনিয়ত নিজ কর্তব্য পালনে অবহেলা প্রদর্শন 
  • আইন সংগত কারণ ছাড়া সরকারের কোন আদেশ, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকরণ 
  • দুর্নীতি দায়ে অভিযুক্ত 
  • দপ্তরের অর্থ কেলেঙ্কারি অথবা নারী কেলেঙ্কারিতে সংযুক্ত 
  • নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত 
  • দন্ডপ্রাপ্ত অর্থাৎ ফৌজদারী মামলায় কারাগারে পাঠানোর দায় 
  • অন্য কোন আইন বা বিধি-বিধানে যে সমস্ত কার্য-অসাচরণ হিসেবে গণ্য ওই কাজগুলো সম্পাদন এবং পলায়ন। 

যেহেতু চাকরি আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয় এবং সুন্দর জীবন যাপনে সবচেয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, তাই আপনি যদি আপনার চাকরি কে টিকিয়ে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই সৎ মন-মানসিকতা তৈরি করুন এবং সঠিক নিয়ম রীতি নীতি ও সততার সাথে কাজ করুন। 

আর যেহেতু কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় বা যে কোন চাকরি চলে যাওয়ার কারণ গুলো কি কি হতে পারে, এগুলো সম্পর্কে আপনি আজকে থেকে অবগত। তাই অবশ্যই সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। তোমার সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তনশীল। তাই আপনি যদি আপনার চাকরি কে টিকিয়ে রাখতে চান তাহলে নিজেকে দক্ষ ও উপযুক্ত হিসেবে প্রতিনিয়ত গড়ুন এবং কাজের প্রতি মনোযোগী হোন। 

আর হ্যাঁ, আলোচনার শেষ পর্যায়ে আমরা চাকরি রক্ষা করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় সমূহ সম্পর্কে অল্প বিস্তর আলোচনা করব। তাই আপনি চাইলে কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় এটা জানার পাশাপাশি সরকারি চাকরি বা যে কোন চাকরির রক্ষার উপায় সমূহ সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন খুঁটিনাটি। এমনকি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আরও পড়তে পারেন– দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায় এবং সরকারি চাকরির না হওয়ার জটিল রোগ সমূহ সম্পর্কে। 

পাশাপাশি চাকরি সম্পর্কিত আরো পোস্ট। যেগুলো আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি। এর জন্য সাজেস্টকৃত লিঙ্কে ভিজিট করুন। আর আমাদের পোস্টগুলো পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে ওয়েবসাইট ফলো করে রাখুন। 

চাকরি রক্ষার উপায়সমূহ

চাকরি থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনা যদি কমাতে চান অর্থাৎ চাকরি রক্ষা করতে চান সে ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে এবং কার্যকরী কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যাবশ্যক। তাই চাকরি রক্ষার্থে কি কি উপায়ে অবলম্বন করতে পারেন জেনে নিন বিস্তারিত।

  • কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি– দায়িত্ব পালনে সতর্কতা ও দক্ষতার বিকাশ চাকরি রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এটি কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে সহায়তা করে।
  • অফিসের নিয়ম মান্য –অফিসের শৃঙ্খলা ও নিয়মাবলী প্রতিপালন করা জরুরি। বিশেষ করে সময় মত অফিসে উপস্থিত হওয়া সময়মতো কাজ শেষ করা এই বিষয়গুলো। বলা যায় এটি চাকরি রক্ষার একটি অন্যতম উপায়।
  • ইথিক্যাল আচরণ– সততা ও নৈতিকতার মান রক্ষা করা। কেননা এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে সম্মানিত হওয়া যায় এবং চাকরিও রক্ষা পায়। 
  • প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন– প্রফেশনাল ট্রেনিং ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং চাকরি রক্ষায় সহায়তা করে। তাই চাকরি রক্ষার জন্য উপায় হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে পারেন এবং নিজের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন মাধ্যম বেছে নিতে পারেন। 
  • স্বাস্থ্য সচেতনতা– শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করার মাধ্যমেও চাকরি রক্ষা করা যায়। ইতিমধ্যে আমরা উল্লেখ করেছি জটিল কিছু রোগের কারণেও চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়ে থাকে।  আর তাই আপনি যদি আপনার কর্ম ক্ষেত্রে টিকে থাকতে চান অর্থাৎ চাকরি রক্ষা করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্য সচেতন হতেই হবে। 

 এ ছাড়াও  যদি আপনি আপনার চাকরিতে ভালো পারফরম্যান্স করতে চান অর্থাৎ চাকরি রক্ষা করতে চান সেক্ষেত্রে–

  • নতুনত্ব জানতে হবে 
  • নিয়মিত আপডেট থাকতে হবে 
  • সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে 
  • কর্মসংস্থানের নীতি এবং নেতৃত্ব দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে 
  • আত্মবিশ্বাসী মনোভাব করে তুলতে হবে 
  • প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে 
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে 
  • গড়ে তুলতে হবে কমিউনিকেশন স্কিল 
  • ক্রিয়েটিভিটি ও ইনোভেশন কে প্রাধান্য দিতে হবে 
  • কাজের প্রতি উৎসাহী ও আগ্রহী মনোভাব তৈরি করতে হবে 
  • বজায় রাখতে হবে আপডেট রিজিউম ও প্রফেশনাল প্রোফাইল 
  • তৈরি করতে হবে ভালো একটি নেটওয়ার্ক সেই সাথে এড়িয়ে চলতে হবে নেতিবাচকতা। 

ব্যাস এতটুকুই। এক কথায় আপনাকে সততার সাথে পরিশ্রমের সাথে কর্মক্ষেত্রের সকল নিয়ম-নীতি ও বিধি-নিষেধ মেনে কাজ করাটাই হচ্ছে চাকরি রক্ষার উপায়। আর হ্যাঁ, অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা সাময়িক সময়ের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। 

তো যারা এমন পরিস্থিতিতে বর্তমানে রয়েছেন তারা সচরাচর জানতে চান– সাময়িক বরখাস্ত কালে করণীয় কি? মানে আপনি যদি সাময়িক সময়ের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে কি করতে হবে! সাময়িক বরখাস্ত কালে আপনাকে কি অফিসে যেতে হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে বলব– হ্যাঁ অবশ্যই সাময়িক বরখাস্ত কালে আপনাকে অফিসে উপস্থিত হতে হবে। 

কারণ আপনি চাইলেই ওই সময়টায় ছুটি নিয়ে বাড়িতে থাকতে পারবেন না। শুধু তাই নয় কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে অর্জিত ছুটি ও কাটানো সম্ভব হবে না আপনার দ্বারা। আর যদি আপনি সেটা করেন তাহলে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্ত নয় বরং সারা জীবনের জন্য বরখাস্ত করা হবে আপনার চাকরি থেকে। এ সময় মূলত আপনাকে কর্মচারী কর্মস্থলেই অবস্থান করতে হবে। মানে আপনাকে দাপ্তরিক নির্দেশ অনুসারে অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং আপনার কার্য সম্পাদন করতে হবে। অতঃপর আপনার ওপর থেকে তুলে নেওয়া হবে বরখাস্তের নোটিশ জারি। 

চাকরি চলে যাওয়ার পরের জীবন | চাকরি থেকে বরখাস্তের পর করণীয় 

অনেকেই আবার এটা জানতে চান- চাকরি চলে যাওয়ার পর অর্থাৎ চাকরি থেকে পুরোপুরিভাবে বরখাস্ত হলে কি করতে হবে! দেখুন আপনি যদি সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্ত হয়ে থাকেন তাহলে তো পুনরায় কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু যদি সেটা না হয় তাহলে আপনাকে আবারো নতুন কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করে চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে এবং একজন কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেতে হবে। 

তাই এর উপর ভিত্তি করে বলতে পারি চাকরি চলে যাওয়ার পর আপনার কাজ হবে—

নতুন চাকরি খোঁজা: কেননা চাকরি চলে যাওয়ার পর নতুন কাজের সন্ধান করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে জীবিকা নির্বাহের নতুন পথ খুলবে এবং আপনি সুন্দরভাবে নিজের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবেন। 

এর পাশাপাশি অবশ্যই আপনার স্কিল আপগ্রেড করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ আপনি চাইলেই বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন স্কিল শিখে কর্মজীবনে ফিরে আসতে পারবেন অনেকটাই স্মার্ট ভাবে। এতে করে আপনার চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না এবং বেশ মোটা অ্যামাউন্ট এর সেলারি পেতে সক্ষম হবেন। এখন আসুন আলোচনার শেষ পর্যায়ে কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় এই সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্নোত্তর ও বেশ কিছু কুয়েরি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। যেগুলো লিখে মাঝেমধ্যেই অডিয়েন্স বন্ধুরা গুগল মামাকে প্রশ্ন করে থাকেন। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও তার উত্তর সমূহ

১. সরকারি চাকরির জন্য কি ধরনের অসদাচরণ হলে চাকরি চলে যেতে পারে?

সহকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ এবং অফিসের নিয়ম কানুন ভঙ্গ ইত্যাদি এই ধরনের অসাচরণের কারণে চাকরি চলে যেতে পারে। সেটা হোক সরকারি চাকরি,  বেসরকারি চাকরি বা কোম্পানি চাকরি। 

২. অনুপস্থিতি কি সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে?

হ্যাঁ, নিয়মিত অনুপস্থিতি ও সময়ানুবর্তিতা না থাকলে সরকারি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে এটিকে প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। 

৩. কর্মস্থলে নেশা গ্রহণ কি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে?

অবশ্যই, অফিসে মাদকদ্রব্য বা অ্যালকোহল গ্রহণ একটি গুরুতর অপরাধ এবং চাকরি চলে যাওয়ার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে একটি। 

৪. মামলা হলে কি সরকারি চাকরি চলে যায়? 

মামলা হলে সরকারি চাকরি চলে যায় এটি মূলত সত্য ও মিথ্যা উভয়ই। কেননা মামলার ধরনের ওপর নির্ভর করে এটি। তবে যদি দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্ত করা হতে পারে আপনাকে। 

৫. বউ তালাক দিলে কি সরকারি চাকরি চলে যায়?

একদমই না, সরকারি চাকরি বা বেসরকারি চাকরি যেকোনো চাকরি চলে যাওয়ার পেছনে ব্যক্তিগত জীবনের এই বিষয়টি একদমই প্রাধান্য পায় না।

৬. কতদিন অনুপস্থিত থাকলে সরকারি চাকরি চলে যায়?

আপনি যদি প্রায় বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে সরকারি চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এটা মূলত চাকরির পদ, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এর ওপর নির্ভর করে থাকে। যাইহোক যদি কোন কর্মী তার কর্ম ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন না করে, সময়মতো উপস্থিত না থাকে এবং নিজের কাজে মনোযোগী না হয় তাহলে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয় অর্থাৎ চাকরি চলে যায়।

৭. চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নোটিশ

চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিশ একেক রকম ভাবে লিখিত আকারে পাঠানো হয়। যাই হোক ধারণা পাওয়ার জন্য আপনি যদি দেখতে চান বা জানতে চান তাহলে নিচের সাজেস্কৃত চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিশটি এক নজরের দেখে নিতে পারেন। 

৮. কর্মদক্ষতার অভাব কি চাকরি চলে যাওয়ার কারণ হতে পারে?

হ্যাঁ কর্মদক্ষতার অভাবেও অনেক সময় চাকরি চলে যায়। এর জন্য সময়ের সাথে সাথে নতুনত্ব জানা এবং নিজের স্কিল ডেভেলপ করা অতীব জরুরী। 

৯. অবসর গ্রহণের পর চাকরি চলে গেলে কি করা উচিত?

চাকরি থেকে অবসর মূলত বয়সের কারণে দেওয়া হয়ে থাকে। যাইহোক আপনি যদি অবসরপ্রাপ্তের পরেও কর্মঠ থাকতে পারেন কাজ করার সক্ষমতা থেকে থাকে তাহলে প্রথমে আপনি আপনার স্কিল আপগ্রেড করতে পারেন। পরবর্তীতে আপনার ভালো লাগার বিষয়টি নিয়ে নতুন কোন পরিকল্পনা করে কাজ করতে পারেন অথবা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কর্মজীবনে ফিরেও আসতে পারেন। 

১০. সরকারি চাকরি চলে গেলে আপিল করার সুযোগ আছে কি?

হ্যাঁ, চাকরি চলে যাওয়ার পর আপীলের অধিকার থাকে এবং এর মাধ্যমে পুনরায় বিবেচনা করার সুযোগ পাওয়া যায়। মানে আপনি সরকারি চাকরি চলে গেলেও আপিল করার সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবেন। 

তো অডিয়েন্স বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা পর্ব। কি কি কারণে সরকারি চাকরি চলে যায় আশা করছি এই বিষয়টি আপনাদের কাছে ক্লিয়ার। তো সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন খুব শীঘ্রই আবারো নতুন টপিকের নতুন কোন আলোচনায় নিয়ে আপনাদের সাথে কথা হবে। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *