জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম
| |

জমির খতিয়ান বা ই-পর্চা ডাউনলোড করুন বিনামূল্যে

একটা সময় ছিল যখন জমির খতিয়ান সংগ্রহের জন্য অনেকটা সময় অতিবাহিত করতে হতো। কিন্তু প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন অনেক কিছুতেই বদল ঘটেছে। তাই জমির খতিয়ান বা ই পর্চা আজকাল ঘরে বসেই সংগ্রহ করা সম্ভব। 

কেননা আপনি শুধুমাত্র আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে জমির খতিয়ান ডাউনলোড করতে পারবেন খুবই সহজে। তাহলে আসুন আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই– জমির খতিয়ান বা ই পর্চা ডাউনলোড প্রক্রিয়া এবং সঠিক পদ্ধতিতে জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে এ টু জেড।

ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

ই পর্চা কি?

ই পর্চা হচ্ছে এমন একটি সেবা প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণকে জমিজমা বা পৈত্রিক নিজস্ব সম্পত্তি সংক্রান্ত সেবা দেওয়া হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের ছোঁয়ায় বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ই-সেবা কেন্দ্র থেকে এই সেবা প্রদানের কার্যক্রম চালু হয়েছে। আর তাই যেকেউ এখন শুধুমাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহার করে জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিল সংগ্রহ করতে পারবেন ঘরে বসে কারো কোন রকম সাহায্য ছাড়াই।

মূলত আপনিও খতিয়ান বা পর্চা অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন মুহূর্তের মাঝেই। এবার আসুন জেনে নেই– পর্চা ও খতিয়ান কাকে বলে এবং ই পর্চা ও খতিয়ানের মধ্যে পার্থক্য কি!

খতিয়ান বা পর্চা বলতে কী বোঝায়?

জমি জরিপের সময় জমির মালিকদের কাছে যে সকল অনুলিপি প্রদান করা হয় সেগুলো রাজস্ব অফিসের দ্বারা সত্যায়িত হবার পর জমির অংশীদারদের যদি কোন আপত্তি না থাকে তাহলে সেটা চূড়ান্তভাবে প্রকাশের জন্য যে অনুলিপি তৈরি করা হয় তাই হলো পর্চা। যাকে খতিয়ান ও বলা হয়।

আরেকটু ভিন্নভাবে বললে বলা যায়, জমির মালিকের জমির দলিল সঠিক রাখতে যে খুচরা অনলিপি গুলো পরবর্তীতে ভূমি বা রাজস্ব অফিসারদের দ্বারা সত্যায়িত করা হয় তাকেই পর্চা বা ই পর্চা অথবা খতিয়ান বলা হয়।

জমির খতিয়ান ও ই-পর্চা কি একই জিনিস?

জমির খতিয়ান এবং পর্চা এই দুইটা কি একই জিনিস? নাকি এদের মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে? খুবই কমন প্রশ্ন এটি। কেননা অনেকেই এটা মনে করেন জমির খতিয়ান ও ই পর্চা একই জিনিস আবার অনেকেই মনে করেন এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। 

তবে সত্যি হচ্ছে খতিয়ান যা, পর্চাও ঠিক তাই। মূলত রাষ্ট্রীয়ভাবে তৈরি করা জরিপের মাধ্যমে জমিজমার মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক জমির মালিকের সম্পত্তির বিবরণ সংবলিত সরকারি দলিল কে খতিয়ান বলা হয়। 

আবার আইনের ভাষা বলা হয়- জরিপের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশ ফরম ভূমির মালিকানা বা দাগের বর্ণনা সহ যে নথি চিত্র প্রকাশিত হয় তাই হচ্ছে খতিয়ান।

খতিয়ান অনুসন্ধান

 জমির খতিয়ান কত প্রকার?

সাধারণত জমির খতিয়ান চার প্রকার। সেগুলো হলো:-

  • সিএস খতিয়ান
  • এস এ খতিয়ান
  • আর এস খতিয়ান
  • বিএস খতিয়ান

সিএস খতিয়ান

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম জরিপ এবং খতিয়ান হচ্ছে সিএস খতিয়ান। ব্রিটিশ আমলে উপমহাদেশে মূলত জমি নিয়ে সর্বপ্রথম যে জরিপ বা সার্ভে করা হয়েছিল সেটাকে সিএস খতিয়ান নামে সম্বোধন করা হয়। যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৮৭ সালে এবং শেষ হয়েছিল ১৯৪০ সালে। 

জানা যায়, cs খতিয়ান এর জরিপ সর্বপ্রথম কক্সবাজারের রামুতে শুরু হয়েছিল এবং সেটার সমাপ্তি ঘটেছিল দিনাজপুরে। এই সিএস খতিয়ান চেনার অন্যতম উপায় হচ্ছে এটি ওপর থেকে নিচ লম্বালম্বি ভাবে হয়ে থাকে এবং বাংলাদেশ ফরম নাম্বার হিসেবে লেখা থাকে ৫৪৬৩। 

মূলত খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠাতে জমির মালিক ও প্রজার নাম উল্লেখ থাকে বিপরীত পৃষ্ঠাতে উল্লেখ থাকে উত্তর সীমানা নামে একটি কলাম। যখন জমিদারি প্রথা ছিল তখন মূলত সিএস খতিয়ানের কার্যকারিতা ছিল অধিক বেশি।

এস এ খতিয়ান

পাকিস্তান আমলের খতিয়ান হল এস এ খতিয়ান। মূলত সিএস খতিয়ানের পরবর্তীতে এর আবির্ভাব ঘটে। জানা যায় ১৯৫০ সালে জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাস হওয়ার পরবর্তীতে তৎকালীন সরকার এই এস এ খতিয়ান এর বন্দোবস্ত করে। 

মূলত সে সময় সরকারি আমিন গন মাঠে না গিয়ে শুধুমাত্র অফিসে বসে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে খতিয়ান তৈরি করতেন। আর এটাকেই বলা হত এস এ খতিয়ান অর্থাৎ State Acquisition Survey. 

আপনি মূলত এই খতিয়ান চেনার জন্য যে সকল বিষয়ে মাথায় রাখবেন সেগুলো হচ্ছে:-

এস এ খতিয়ান মূলত এক পৃষ্ঠার হয়ে থাকে এবং এটি আড়াআড়ি ভাবে লেখা হয়। খতিয়ানের ডানপাশে উল্লেখ করা থাকে সাবেক খতিয়ান সিএস এবং হালনাগাদ নম্বর। আর তাই আপনি যদি খতিয়ান দেখে বুঝতে চান যে উক্ত খতিয়ানটি সিএস, আর এস, এসএ নাকি বিএস খতিয়ান তাহলে এই বিষয়গুলো মিলিয়ে দেখুন।

আর এস খতিয়ান

আর এস খতিয়ান হচ্ছে এস এ খতিয়ানের ভুল সংশোধন। যদি এস এ জরিপ বা ক্ষতি আনে কোন প্রকার ভুল থেকে থাকে তাহলে আর এস খতিয়ানের সাহায্যে সেটার সংশোধন করা যায়। মূলত এই জরিপটি জমি মালিক এবং দখলদারের তথ্য নিয়ে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। 

আপনি যদি আরএস খতিয়ান চিনতে চান তাহলে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে এই আর এস খতিয়ান মূলত এক থেকে দুই পৃষ্ঠার মধ্যে হয়ে থাকে এবং এটা সম্পূর্ণ হাতে লেখা হয় এবং খতিয়ানের একদম উপরের ডানপাশে লেখা থাকে রেসারভে নং। তাই আপনি আর এস খতিয়ান চেনার জন্য ডান দিকে রেসারভে নাম্বার লেখা রয়েছে কিনা সেটা লক্ষ্য করুন। এবার আসুন জেনে নেই সিটি জরিপ খতিয়ান অর্থাৎ বিএস খতিয়ান সম্পর্কে জরুরী কিছু বিষয়াবলি।

বিএস খতিয়ান

বাংলাদেশের সর্বশেষ জরিপ বা খতিয়ান হচ্ছে বিএস খতিয়ান। যা ১৯৯৮ সাল থেকে ১৯৯৯ সালে সংঘটিত হয় এবং যেটার কাজ এখনো পর্যন্ত চলমান রয়েছে। যেটা আরেকটি নামে পরিচিত। নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন হয়। এ খতিয়ানটি চেনার উপায় হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ কম্পিউটারে টাইপ করা এবং বিএস খতিয়ানে সাধারণত ৯ টা কলাম ও জমির ধরন উল্লেখিত। তাই বিএস খতিয়ান চেনার জন্য নজর দিন যে উক্ত খতিয়ানে জমির ধরন উল্লেখ রয়েছে কিনা এবং খতিয়ানটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার টাইপিস্ট কি না। এবার আসুন জেনে নেই খতিয়ান বা পর্চার সুবিধা সমূহ।

খতিয়ান বা ই-পর্চার সুবিধা কি কি?

দেখুন ইতোমধ্যে আপনি নিশ্চয়ই এটা বুঝেছেন খতিয়ান বা পর্চা হচ্ছে একটি সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানার রেকর্ড বা নথিপত্র। যেটা সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক রুপে রাখা হয় এবং যেখানে জমির মালিকানা, মালিকানার অবস্থান জমির আয়তন দাগ নম্বর প্রমাণিত গ্রাম ও মৌজার নাম ইত্যাদি সকল প্রকার তথ্য সংরক্ষিত থাকে। 

সবমিলিয়ে বলা যায় খতিয়ান ইলেকট্রনিক দলিল হিসেবে কাজ করে। যেটা যেকোনো সময় সংগ্রহ করে জমির মালিকানার তথ্য যাচাই করা যায় এবং জমির বিপরীত অবস্থান ও সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়।  

মূলত এর সুবিধা হলও, ই পর্চা সিস্টেম ব্যবহার করে জমির তথ্য অনলাইনে সহজেই সংরক্ষিত করে রাখার সুবিধা এবং যেকোনো সময় মুহূর্তে তা সংগ্রহের সিস্টেম বা ব্যবস্থাপনা। এবার চলুন জমির খতিয়ান বা এ পর্চা ডাউনলোড প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম

আমাদের এই ছোট্ট সুন্দর সোনার বাংলাদেশ, অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতে সবচাইতে বড় সমস্যা জমির সমস্যা। মানুষের জমি জমার সমস্যা এত পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, আপনি যদি আদালতে যান তাহলে আদালতের সবচেয়ে বেশি মামলা গুলো জমিকে কেন্দ্র করেই করা হয়েছে এমনটাই দেখতে পাবেন।

আর তাই আপনার জমি জমি ঠিকঠাক রয়েছে কিনা জমির খতিয়ান এবং জমির অন্যান্য কাগজপত্র সঠিক রাখতে সঠিক সময় সঠিক স্টেপ গুলো অবশ্যই গ্রহণ করা জরুরী। কেননা একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আপনি আপনার জমির প্রায় সকল কার্যাবলীর সম্পন্ন করতে পারবেন এই অনলাইন পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাহলে চলুন জেনে নেই জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে ধাপে ধাপে কি কি কাজ করতে হবে সে সম্পর্কে— 

  • প্রথম ধাপে: প্রবেশ করুন eporcha.gov.bd ওয়েবসাইটে. 
  • দ্বিতীয় ধাপে: কিছুটা স্কল করার পরবর্তীতে সিলেক্ট করুন আপনার বিভাগ। 
  • তৃতীয় ধাপে: আপনি কোন জেলায় বাস করেন সেটা সিলেক্ট করুন।
  • চতুর্থ ধাপে: আপনার উপজেলা সিলেক্ট করুন।
  • পঞ্চম ধাপে: আপনার খতিয়ানের ধরন কি তা সঠিকভাবে বাছাই করে নির্বাচন করুন।
  • ষষ্ঠ ধাপে: সঠিকভাবে বাছাই করে আবারো সিলেক্ট করুন আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান।
  • (বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপনি যদি এ সময় আপনার খতিয়ান খুঁজে না পান তাহলে উপরের সার্চ বক্স থেকে সার্চ করার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা খুঁজে বের করতে পারবেন। এক্ষেত্রে মূলত সেখানে আপনার খতিয়ান নম্বর এবং খতিয়ানের মালিকের নাম উল্লেখ করতে হবে
  • সপ্তম ধাপে: খতিয়ান খুঁজে পাওয়ার পরবর্তীতে তার ওপর ক্লিক করতে হবে সাজেস্ট কৃত বক্সে। এ সময় মূলত ডাবল ক্লিক করবেন উক্ত স্থানে। 
  • অষ্টম ধাপে: আপনি বিস্তারিত জানার জন্য বিস্তারিত বাটনে ক্লিক করবেন। যেখানে পুরোপুরি ইনফরমেশন প্রদান করা হবে আপনাকে।
  • নবম ধাপে: এ পর্যায়ে আপনাকে খতিয়ান আবেদন করুন এই বাটনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পরবর্তীতে সিলেক্ট করতে হবে অনলাইন কপি অপশনটি। 
  • দশম ধাপে: আপনাকে নির্ভুলভাবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, মোবাইল নাম্বার এবং জন্মতারিখ উল্লেখ করার মাধ্যমে যাচাই করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
  • এ পর্যায়ে আপনার সামনে “সঠিক হয়েছে” নাকি “ভুল হয়েছে” এমন একটা সংকেত পাঠানো হবে। 
  • ১১ তম ধাপে: যদি আপনার ইনফরমেশন সম্পূর্ণ ঠিকঠাক থেকে থাকে তাহলে এ পর্যায়ে পরবর্তী স্টেপে পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করতে হবে। 
  • কেননা বিকাশ, রকেট, নগদসহ কার্ড ও ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করার পরবর্তীতে আপনি আপনার অনলাইন কপিটি সংগ্রহ করতে পারবেন। 
  • (বিশেষ দ্রষ্টব্য: বিগত বছরগুলোতে অনলাইনে জমির খতিয়ান সংগ্রহের জন্য পেমেন্ট দেওয়ার প্রয়োজন পড়তো না। কিন্তু এখন অনলাইন কপি পেতে পেমেন্ট হিসেবে ১০০ টাকা পে করতে হয়। এই নিয়ম মূলত পরবর্তীতে করা হয়েছে। তাই অনেকেরই ধারণা, পেমেন্ট না করেও জমির খতিয়ান সংগ্রহ করা সম্ভব।)
  • ১২ তম ধাপে: পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে পেমেন্ট অপশন থেকেই খতিয়ান চলে আসবে আপনার সামনে। পরবর্তীতে আপনি ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারবেন। 
  • আর হ্যাঁ যদি সরকারি সেবা অ্যাপ দিয়ে আপনি এই কাজটি করে থাকেন তাহলে পেমেন্ট করার পরবর্তীতে অটো আপনার মোবাইল স্টোরেজে আপলোড হয়ে যাবে উক্ত ফাইলটি। যে ফাইলে আপনার জমির খতিয়ানের বিস্তারিত দেওয়া থাকবে। 

জমির খতিয়ান চেক বা জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম

সাধারণত মোট চার ভাবে জমির খতিয়ান যাচাই করা যায়। আপনি যদি জমির খতিয়ান চেক করতে চান বা জমির খতিয়ান বের করার জন্য সঠিক একটা নিয়ম মেনে চলতে চান তাহলে এর জন্য আপনার অবশ্যই জানতে হবে

  • খতিয়ান নম্বর
  • জমির দাগ নম্বর
  • জমির মালিকের নাম অথবা
  • জমির মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম।

কেননা আপনার কাছে যদি খতিয়ান নম্বর থেকে থাকে বাকি তিনটা তথ্য না জানা থাকে তাহলেও আপনি জমির খতিয়ান চেক করতে পারবেন। আবার জমির দাগ নম্বর থাকলে তার সাহায্যেও জমির খতিয়ান বের করা যাবে। এর জন্য আপনাকে ধারাবাহিকভাবে যে কাজগুলো করতে হবে সেগুলো হলো

প্রথমত: ভিজিট করতে হবে eporcha.gov.bd ওয়েবসাইটে।

দ্বিতীয়ত: বিভাগ ঘর থেকে আপনার বিভাগ যাচাই করতে হবে

তৃতীয়ত: জেলা এবং উপজেলা ঘর থেকে আপনাকে সঠিকটা যাচাই করতে হবে পরবর্তীতে মৌজা ঘরে ক্লিক করে আপনার উপজেলার যে সকল মৌজার খতিয়ান চূড়ান্ত হয়েছে সেই সকল মৌজার নাম দেখতে পাবেন। সে সময় আপনাকে উক্ত জমি অর্থাৎ আপনি যে জমিটির খতিয়ান বের করবেন সেটি কোন মজায় অবস্থিত তা যাচাই-বাছাই করে সিলেক্ট করতে হবে

আর এ পর্যায়েই মূলত আপনি খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর অথবা জমির মালিকের নাম বা তার পিতা/ স্বামীর নাম লিখে সার্চ করার মাধ্যমে সরাসরি আপনি জমির খতিয়ানটি বের করতে পারবেন। এবার আসুন জেনে নেই জমির খতিয়ান কিভাবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় সে সম্পর্কে।

জমির খতিয়ান দেখতে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন

ইতোমধ্যে আমরা জমির খতিয়ান বা ই পর্চা ডাউনলোড করার পদ্ধতি সমূহ ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করেছি। এখন আমরা কয়েকটি স্টেপ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেবো কিভাবে আপনি জমির খতিয়ান রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। 

মনে রাখবেন, জমি সংক্রান্ত যেকোনো ইনফরমেশন যদি আপনি খুঁজে পেতে চান তাহলে প্রথমত আপনাকে eporcha.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। যেখান থেকে স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ সংগ্রহ করা সম্ভব। এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনি হোম পেজে দেখতে পাবেন,

  • নির্দেশিকা
  • সার্ভে খতিয়ান
  • নামজারি খতিয়ান
  • মৌজা ম্যাপ
  • এবং আবেদনের অবস্থা এমনই চারটি আলাদা ক্যাটাগরির বক্স।

এখন আপনি যে তথ্য অনুসন্ধান করতে চান তার ওপর ক্লিক করার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সকল ইনফরমেশন পূরণ করে খুব সহজেই তা সংগ্রহ করতে পারবেন। 

মূলত এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে আপনি উপরের ডান সাইডে লগইন অপশন দেখতে পাবেন। যেখান থেকে আপনি নাগরিক হিসেবে লগইন বা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। প্রথমে ক্লিক করার পর আপনার সামনে মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড লেখার জায়গা শো করানো হবে। 

যদি এই ওয়েবসাইটে আপনার পূর্বেই অ্যাকাউন্ট খোলা থাকে তাহলে মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড বসানোর পর লগইন অপশনে ক্লিক করুন। আর যদি কোন অ্যাকাউন্ট না থেকে থাকে তাহলে আপনাকে নতুন একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে আর যদি পাসওয়ার্ড ভুলে যান তাহলে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনও করার সুযোগ রয়েছে এখানে। 

মূলত আপনি স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ধাপে ধাপে প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন গুলো পূরণ করে আপনার প্রয়োজন মাফিক কাজগুলো সম্পাদন করতে পারবেন। সেটা জমির মালিকানা বের করা হোক বা খতিয়ানের অনলাইন কপি!

জমির খতিয়ান বা ই-পর্চা সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন

প্রশ্ন নাম্বার -১.  খতিয়ান বের করতে কত টাকা লাগে?

উত্তর: আপনি যদি অনলাইনে জমির খতিয়ান বের করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে ১০০ টাকা পে করতে হবে। আর হ্যাঁ ১০০ টাকার সাথে দুই টাকার মত পেমেন্ট চার্জ প্রযোজ্য। 

প্রশ্ন নাম্বার -২.  অনেক সময় মৌজা পাওয়া যায় না তখন কি করব?

উত্তর: এ পর্যায়ে খতিয়ানের ধরন আর এস বা বি আর এস উল্টাপাল্টা করে বসিয়ে সিলেক্ট করে ট্রাই করতে পারেন। তবে সচরাচর এই সমস্যাটা দেখা দেয় যদি কোন ইনফরমেশন ভুল দেওয়া থাকে বা কোন বানান ভুল হয়। তাই অবশ্যই বারবার যাচাই-বাছাই করে নির্বাচন অপশনে ক্লিক করবেন। 

প্রশ্ন নাম্বার -৩. : খতিয়ান বের করার জন্য কোন ওয়েবসাইটে যেতে হয়?

উত্তর: ক্ষতিয়ানসহ জমির যেকোনো দলিল বা কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য ভিজিট করতে হয় eporcha.gov.bd (ই-পর্চা.গভ.বিডি.কম) ওয়েবসাইটে। 

প্রশ্ন নাম্বার-৪: ভূমি সেবা হট লাইন নাম্বার কতো?.

উত্তর: ভূমি সেবা হট লাইন নাম্বার হলো ১৬১২২.

উপসংহার:  তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কিভাবে অনলাইনে জমির খতিয়ান পর্চা পাবেন, জমির খতিয়ান বা ই-পর্চা ডাউনলোড করবেন কিভাবে এ  সম্পর্কিত আলোচনার আজ এখানেই ইতি টানছি। আশা করি আপনি আমাদের স্টেপগুলো ফলো করে সহজেই জমির খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন। তবুও যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই তার সমাধান দেবার। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুনঃ ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *