নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা
|

নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা

নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা: বিশ্ব তথা ভারতের মতো দেশে ওয়েব সিরিজ, অনলাইনে মুভি ও টিভি সিরিয়াল দেখার দৌরাত্ম যেভাবে বেড়ে চলেছে– তাতে মানুষের থিয়েটারমুখী ও শোপ-অপেরা নির্ভর জীবনযাত্রার মালিকানাধীন হওয়ার প্রবণতা চরম হারে কমবে এটাই স্বাভাবিক।

কেননা বর্তমান বিশ্ব এখন উন্নত সেই সাথে পুরোপুরিভাবে প্রযুক্তিনির্ভর হতে চলেছে। তাই শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্ট ফোন বা যেকোন ইলেকট্রিক ডিসপ্লে ডিভাইস থাকলে এখন যেকোনো এন্টারটেইনমেন্ট এক্কেবারে রেডি। আর এমনই একটি আন্তর্জাতিক ও জনপ্রিয় অভার দ্য টপ অর্থাৎ ওটিটি প্লাটফর্ম হলো নেটফ্লিক্স। যেটা সম্পর্কে আমরা বর্তমানে অনেকেই জানি।

কেননা দুর্দান্ত একটি মাধ্যম এই নেটফ্লিক্স। যার সাহায্যে বিজ্ঞাপনহীন ভাবে টিভি শো ও সিনেমা দেখা সম্ভব হয়। অনেকেই নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা সম্পর্কে জানতে অনেক বেশি আগ্রহী। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নেটফ্লিক্স এর প্রতিষ্ঠাকাল ও তার ইতিহাস সম্পর্কে কিছু বিষয় আলোচনা করব। তাই অবশ্যই স্কিপ না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা

সময়টা ছিল ১৯৯৭ সাল। জানা যায় ১৯৯৭ সালের ২৯ শে আগস্ট সুতরাং আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থান ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্কটস ভ্যালি। যার সদর দপ্তর ১০০ উইনচেস্টার সার্কেল, লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ছোট্ট শহর।

মূলত প্রথম দিকে এ ধরনের প্লাটফর্ম মেইল ইন ডিভিডি ভাড়া দেওয়ার পরিষেবা দেয়ার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। বর্তমানেও তারা এই পরিসেবাটি দিয়ে থাকে তবে এটা শুধুমাত্র আমেরিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কেননা বাইরের দেশগুলোতে অর্থাৎ আমেরিকার বাইরে ১৯৯৯ সাল থেকে নেটফ্লিক্স তাদের অনলাইন সাবস্ক্রাইশন পরিষেবা দেওয়া শুরু করে।

আর ইন্টারনেটে বিশ্বব্যাপী দখলের সম্ভাবনাকে সফলভাবে আন্দাজ করে কোম্পানিটি। মূলত পরিবর্তিত প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রূপান্তরিত করতে পেরেই নেটফ্লেস বর্তমান সময়ে এতটা সফল এবং জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম।

নেটফ্লিক্স এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আজ থেকে ২৫ বছর আগে আগস্ট মাসের ২৯ তারিখ সাল ১৯৯৭ এ নেটফ্লিক্স প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত সংস্থান মিডিয়া দর্শন এবং প্রয়োজন মাফিক অনলাইন ও dbd mail এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে দক্ষ নেটফ্লিক্স পরবর্তীতে চলচ্চিত্র এবং ছোটপর্দার ধারাবাহিক চলচ্চিত্র পরিচালনাতে সম্প্রসারিত হয়। তারপর ইন্টারনেট ভিত্তিক অনলাইন চলচ্চিত্রের বন্টন চালু করে।

তবে ইতিহাস থেকে জানা যায় ২০১৩ সালে নাটক চলচ্চিত্র ভিডিও প্রযোজনা শিল্পে প্রথম প্রবেশ করেন নেটফ্লেক্স। তাদের পরিচালিত প্রথম ধারাবাহিক “হাউস অফ কার্ডস”। মূলত নেটফ্লিক্স এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে আর এর পর থেকেই চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ধারাবাহিক উভয়ের তৈরিতে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করতে থাকে।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালে আনুমানিক ১২৬ টি নিজস্ব ধারাবাহিক এবং চলচ্চিত্র প্রকাশ করে তারা। আর তাই হিসাব করে জানা যায় অন্য সব ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ সকল টেলিভিশন চ্যানেলের তুলনায় সেই সংখ্যাটা ছিল অনেক বেশি। তারপর ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের রিপোর্ট অনুযায়ী সারা বিশ্বে নেটফ্লিক্সের গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১০৯.২৫ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।

তারপর থেকে তারা নিত্যনতুন ইউনিক কনটেন্ট তৈরি করতে থাকে এবং অতিরিক্ত কনটেন্ট সমূহের যথাযথ অধিকার সুরক্ষা করে পরবর্তীতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বুকে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হিসেবে জায়গা দখল করে নেটফ্লিক্স। বলতে পারেন সিনেমা ওয়েব সিরিজ দেখার জন্য মানুষের খুবই প্রিয় একটি মাধ্যম। 

নেটফ্লিক্স এর কার্যালয় কোথায়?

আমরাইতোমধ্যে জানিয়েছি নেটফ্লিক্সের সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লা গেটস শহরে অবস্থিত। তবে এর বাইরেও বেশ কয়েকটি কার্যালয় রয়েছে এই নেটফ্লিক্স এর। সে জায়গাগুলো হল:

  • নেদারল্যান্ড
  • ইন্ডিয়া
  • ব্রাজিল
  • জাপান
  • উত্তর কোরিয়া এবং
  • বাংলাদেশ।

নেটফ্লিক্স সাম্রাজ্যের উত্থান

ফিল্ম টিভির ভবিষ্যৎ নেটফ্লিক্স এর মত ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। তবে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। তবে নেটফ্লিক্স এর কারণে টিভি দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। একটা সময় টিভিতে সিনেমা ধারাবাহিক দেখার জন্য পাগল হয়ে যেত মানুষ। কিন্তু এখন টিভির চাইতে এই সকল মাধ্যম অধিক বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত এই অনলাইন টেলিভিশন চ্যানেল পরিবর্তন এনেছে অনেক কিছুর। আর তাই বর্তমানে নেটফ্লিক্স হচ্ছে অনলাইন স্ট্রিমিং জগতে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। সেই সাথে বলা যায় ব্লকবাস্টার সাম্রাজ্যের পতন ঘটানোর উপলক্ষ। আপনি যদি একটু রিসার্চ করেন তাহলে জানতে পারবেন ১৯৯০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের তুমুল জনপ্রিয় এক প্রতিষ্ঠানের নাম হিসেবে মাথাচারা দিয়েছিল ব্লকবাস্টার।

মূলত ঘরোয়া ভাবে সিনেমা দেখার নাম ছিল ব্লকবাস্টার।। এরাও ডিভিডি ভাড়া দিত আর সেই ডিভিডি নিয়ে দোকানে ভিড় জমত। মূলত গ্রাহকরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিনেমা দেখার উদ্দেশ্যে টাকার বিনিময়ে ডিভিডি নিয়ে যেত বাড়িতে তারপর নির্দিষ্ট সময় পর আবারো ফিরিয়ে দিত। কিন্তু পরবর্তীতে এই নেটফ্লিক্স এসে সবকিছুকে পাল্টে দিয়েছে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, নেটফ্লিক্সের সহ আবিষ্কারক রিড হ্যাস্টিংস বারবার ডিভিডি নেওয়া এবং ফেরত দেওয়ার বিষয়টি খুবই বিরক্তকর মনে করতেন। অতি বিরক্তির কারণেই তিনি একটা সময় চিন্তা করেন এমন কিছু নিয়ে আসার কথা যেটা অন্তত এমন বিরক্তিদায়ক প্যারা দেবে না। আর সেই প্রেক্ষাপটেই নেটফ্লিক্স আবির্ভূত হয় এক অভিনব আইডিয়া নিয়ে। মূলত নেটফ্লিক্স শুরুতে গ্রাহকদের দোকানে যাওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়। তাই ধীরে ধীরে ব্লকবাস্টারের কদর কমতে থাকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে নেটফ্লেক্স।

২০০০ সালের দিকে হুট করে ৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ব্লকবাস্টার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে দেয় এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে তারা সেটা কিনে নেওয়ার ক্ষমতা দেখালেও ব্লকবাস্টারের প্রতিষ্ঠাতা এতে একদমই রাজি হন না। কিন্তু পরবর্তীতে ২০০২ সালের দিক থেকে ব্লকবাস্টার আস্থা সংকটের কারণে তারা গ্রাহক সংখ্যা খুব দ্রুত হারাতে বসে। আর অল্প সময়ের মধ্যে শীর্ষে পৌঁছে যায় নেটফ্লিক্স। ২০০৭ সাল থেকে পরবর্তীতে তারাও ভিডিও স্ট্রিমিং শুরু করে ২০১০ সালে গ্রাহক সংখ্যা ডিভিডি ব্যবহারকারীদেরকে ছাড়িয়ে যায়। মূলত এভাবেই হঠাৎ করে নতুন কিছু নিয়ে আসার কারণে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছায় নেটফ্লিক্স।

আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন ১০ ডলার আয়ের উপায় কিছু জেনে নিন শুধু ডাটা এন্ট্রি করে

নেটফ্লিক্স কি পেইড?

নেটফ্লিক্স মূলত পেইড। তবে সাবস্ক্রিপশন ছাড়াও বিনামূল্যে এক মাস যে কোন গ্রাহক ব্যবহার করতে পারবেন। কেননা এই প্রতিষ্ঠানটি নতুন সব গ্রাহকদের বিনামূল্যে এক মাস সকল ধরনের প্রোগ্রাম দেখার সুযোগ দিয়ে থাকে। আর আপনি যদি এই ফ্রি ট্রেলের সুবিধা উপভোগ করতে চান তাহলে ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ডের সব তথ্য নেটফ্লিষ্ট কে জানাতে হবে।

প্রথম মাসের মধ্যে ট্রায়াল বন্ধ করে দিলে কোন টাকা দিতে হবে না আর বন্ধ না করলে একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে। আর হ্যাঁ একটি ইমেইল আইডি থেকে একবার মাসে এই ট্রাইল পেতে পারেন আপনি।

জেনে নিন নেটফ্লিক্স সম্পর্কে কিছু তথ্য

ব্যবসার প্রকার

   

সর্বজনীন

হিসাবে প্রচারিত

   

প্রতিষ্ঠা

   

২৯ আগস্ট ১৯৯৭; ২৫ বছর আগে in স্কটস ভ্যালি, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

সদরদপ্তর

   

১০০ উইনচেস্টার সার্কেল, লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

পরিবেষ্টিত এলাকা

   

১৯০টি দেশে

প্রতিষ্ঠাতা(গণ)

   

প্রধান ব্যক্তি

   

শিল্প

   

বিনোদনধর্মী

পণ্যসমূহ

   

পরিষেবাসমূহ

   

আয়

   

মার্কিন $২০.১৫৬ বিলিয়ন (২০১৯)

অপারেটিং আয়

   

US$২.৬০৪ বিলিয়ন (২০১৯)

নিট আয়

   

US$১.৮৬৬ বিলিয়ন (২০১৯)

সর্বমোট সম্পত্তি

   

US$৩৩.৯৭৫ বিলিয়ন (২০১৯)

সামগ্রিক সমতা

   

US$৭.৫৮২ বিলিয়ন (২০১৯)

কর্মচারী

   

৬,৭০০ (২০১৯)

বিভাগ

   

পারিবারিক স্ট্রিমিং

আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং

পারিবারিক ডিভিডি

অধীনস্থ কোম্পানি

   
  • নেটফ্লিক্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা
  • নেটফ্লিক্স আন্তর্জাতিক
  • নেটফ্লিক্স স্ট্রিমিং সেবা
  • নেটফ্লিক্স স্টুডিও
  • ডিভিডি.কম
  • মিলারওয়াল্ড

ওয়েবসাইট

   

www.netflix.com

অ্যালেক্সা অবস্থান

   

২১ (জানুয়ারি ২০২০)

নিবন্ধন

   

প্রয়োজন

ব্যবহারকারী

   

১৬৯ মিলিয়ন (গ্রাহক)[৩]

পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, নেটফ্লেক্স প্রতিষ্ঠার তারিখ ও জায়গা সম্পর্কিত আমাদের আর্টিকেলটি আজ এখানেই শেষ করছি। তোর নিয়মিত এই ধরনের যেকোনো আর্টিকেলের নোটিফিকেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন। পাশাপাশি কোন মন্তব্য থেকে থাকলে কমেন্ট করে জানান। আল্লাহ হাফেজ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *