ময়েশ্চারাইজার কি
|

ময়েশ্চারাইজার কি? ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের উপকারিতা

ময়েশ্চারাইজার এর উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রায় সবারই। কেননা প্রত্যেকেই চায় গ্লো, তকতকে ঝকঝকে  সুন্দর ত্বক পেতে। আর তাই হাজির হয়েছে আমাদের আজকের আলোচনা নিয়ে। 

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা,  আপনারা যারা স্কিন কেয়ার করতে চান এবং স্কিনকে সুন্দর করার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ইচ্ছুক এবং ময়েশ্চারাইজার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি সম্পর্কে এ টু জেড জানতে চান তাদেরকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের এই আলোচনা পর্বে।

এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম এবং এ সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্নাবলী সম্পর্কে। 

আশা করছি, আজকের এই আর্টিকেলটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ  পড়বেন। তাহলে আসুন শুরু করি।

ময়েশ্চারাইজার কি?

ময়েশ্চারাইজার মানে কি? এটি বলতে আসলে কি বোঝায়? এমনও প্রশ্ন করে থাকেন অনেকেই। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবো– ময়েশ্চারাইজার হচ্ছে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনার ক্রিম। 

সাধারণত আমাদের কারো ত্বক খুবই অয়েলি, আবার কারও  কারও ত্বক খুবই ড্রাই, একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন কারো কারো ত্বক  বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত বুরিয়ে যাওয়া। আর সেই ত্বক প্রাণবন্ত উজ্জ্বল ও মসৃন করার জন্যই মূলত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়। 

সুতরাং এক কথায় বলা যায় ময়েশ্চারাইজার হচ্ছে ত্বককে মনের মত রাখার একটা ক্রিম যেটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে ভেতর থেকে করে তোলে মসৃণ এবং প্রাণবন্ত। 

ময়েশ্চারাইজার কত প্রকার ও কি কি?

উপাদানের ভিত্তিতে ময়েশ্চারাইজার কে মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো:-

  • হিউমেক্ট্যান্টস
  • অক্লুসিভস
  • ইমোলিন্টস এবং
  • প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। 

ময়েশ্চারাইজার এর কাজ কি?

আমরা আর্টিকেলের পরবর্তী পর্যায়ে ময়েশ্চারাইজারের উপকারিতা সমূহ বিস্তারিত তুলে ধরবো। আর উপকারিতা সমূহ জানতে পারলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন ময়েশ্চারাইজার মূলত কি কি কাজ করে। তবে হ্যাঁ এককথায় বলা যায় ময়শ্চেরাইজারের প্রধান কাজ হচ্ছে শুষ্ক ত্বকে আদ্রতা ফিরিয়ে আনা। 

ময়েশ্চারাইজার এর উপকারিতা

ময়েশ্চারাইজারের উপকারিতা অনেক। যেমন:-

  • ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলা।
  • ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখা
  • ত্বকে মসৃণ রাখা
  • বয়সের ছাপ দূর করা
  • ব্রণের সমস্যার সমাধান করা
  • সূর্য রোশনি থেকে সুরক্ষা প্রদান
  • স্কিনকে স্মুথ বা প্রশমিত রাখা সহ প্রভৃতি উপকারিতা। 

মূলত– নারী পুরুষ উভয়েরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অনেক বেশি জরুরী। কেননা এর নানা উপকারিতা রয়েছে। তবে হ্যাঁ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে যদি ভাল ফলাফল পেতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা ময়েশ্চারাইজার কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানেন না। 

আর তাই পরবর্তী স্টেপে আমরা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় সমূহ তুলে ধরব। যেহেতু ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই এ বিষয়ে অবগত হওয়া জরুরি বৈকি।

আরো পড়ুনঃব্রণের জন্য কোন সাবান ভালো

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়ম

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের সময় সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে মূলত ধারাবাহিকভাবে যে স্টেপগুলো মেনটেইন করে চলতে হবে সেগুলো হলো:-

  • প্রথমত: পরিমাণ মতো ময়েশ্চারাইজার হাতে নিয়ে ডট আকারে পুরো ত্বক এবং গলার এরিয়াতে লাগাতে হবে। 
  • দ্বিতীয়ত: হাত দিয়ে upword motion অর্থাৎ ত্বকের সাথে অর্ধমুখীভাবে তা ম্যাসাজ করতে হবে।
  • তৃতীয়ত: ক্রিম মাখার সময় অবশ্যই চামড়া নিচের দিকে টানা যাবে না। বরং আস্তে আস্তে বৃত্তাকার আকারে হাত ঘুরাতে হবে আলতোভাবে। 

ব্যাস। আমাদের মাঝে বেশি সংখ্যক মানুষ রয়েছেন যারা ক্রিম হাতে নিয়ে অতিরিক্ত জোরে জোরে গালে ঘষে ঘষে শুরু করেন। এটা কিন্তু ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আপনি যদি এমনটা করে থাকেন তাহলে আপনার ত্বক ড্রাই হয়ে যাবে এবং আপনার চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বে অতি দ্রুত। 

যেহেতু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের উদ্দেশ্য হচ্ছে যাতে করে ত্বকে বয়সের ছাপনা পরে এবং বলে রেখে বজায় রেখে সুন্দর মসৃণ একটা ত্বক এর অধিকারী হওয়া যায়, অতএব ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার সময় গলা এবং ত্বকের চামড়া যেন ঝুলে না পরে সেই নিয়মেই তা ইউজ করতে হবে। 

আর হ্যাঁ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ত্বক ভালো করে ফেসওয়াস বা আপনার পছন্দের যেকোন ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে নেবেন। যারা টোনার সিরাম ব্যবহার করেন, তারা চাইলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পূর্বে সেটা পরিমাণমতো মেখে নিতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা কি সত্যিই প্রয়োজন?

সংক্ষেপে এই প্রশ্নটি র উত্তরে বলব হ্যাঁ। আর আপনি যদি এ পর্যন্ত ওর সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এটা বুঝতে বাকি থাকবে না যে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা কতটা জরুরি আমাদের ত্বকের জন্য। তবুও বোঝার সুবিধার্থে আবারও বলছি,

আপনি যদি আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে চান এবং ত্বকের পরিবেশগত ক্ষতি রোধ করার জন্য কোন স্টেপ নিতে চান তাহলে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার প্রয়োজন রয়েছে আপনার। আর তাই এখনই আপনার ত্বকের জন্য মানানসই ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন এবং সুন্দর ও গ্লোয়িং ত্বকের জন্য নিয়মিত ব্যবহার করুন ময়েশ্চারাইজার। 

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের সঠিক সময়

ময়েশ্চারাইজার সাধারণত দুইবার ব্যবহার করা হয়। তবে কখনো কখনো তিনবার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। তবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের সাধারণ সময় হচ্ছে দিনের শুরু এবং রাতের শেষ অর্থাৎ ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে। 

যখন দিনের শুরু হয় তখন আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনার ব্যবহৃত ফেসওয়াশ বা রেঞ্জার দিয়ে মুখ ভালোভাবে ওয়াশ করে নিন পরবর্তীতে সঠিক নিয়মে ব্যবহার করে ফেলুন ময়েশ্চারাইজার। এরপর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে আবারো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ক্লিন করে পুনরায় এটি প্রয়োগ করুন সঠিক নিয়মে। 

আর হ্যাঁ আমি যখন দুপুরে গোসল করে থাকি তখন মূলত আমাদের কোষ অনেক বেশি নরম হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সে সময় শরীরে আদ্রতা বজায় রাখতে মাস্টার স্যার ব্যবহার করা যায়। আবার যারা দিনের বেলায় অতিরিক্ত ব্যস্ত থাকি কাজের জন্য বাইরে থাকা হয় তাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় অধিক বেশি আর সে ক্ষেত্রেও ত্বক পরিষ্কার করে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এতে করে ত্বক সুন্দর থাকে এবং ত্বকের কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে না। 

তবে আপনি যদি অধিক বেশি সময় দিতে না পারেন তাহলে এ ময়েশ্চারাইজার সাধারণত সকালে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। আর হ্যাঁ ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ত্বকের জন্য জরুরী এবং জরুরী। তাছাড়া এখনও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করছেন না তারা মানানসই  ময়েশ্চারাইজার এখনই কিনে ফেলুন এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করুন। 

বাজারের সেরা ময়েশ্চারাইজার

আলোচনা শেষ পর্যায়ে আমরা বাজারের সেরা কিছু ময়েশ্চারাইজার সাজেস্ট করব। যেগুলো আপনি সহজেই মার্কেট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন আবার অনলাইনেও বিভিন্ন পেজ বা ওয়েবসাইটে অর্ডার করতে পারবেন। তাহলে আসুন জেনে নেই বাজারের সেরা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কোনগুলো রয়েছে অথবা কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো:-

  • ১.লিলিয়ানা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার
  • ২.ওলে ফেস ময়েশ্চারাইজার
  • ৩.CeraVe ময়শ্চারাইজিং ক্রিম
  • ৪.নিউট্রোজেনা হাইড্রো বুস্ট ময়েশ্চারাইজার
  • ৫. রাধা বিউটি রেটিনল ময়েশ্চারাইজার
  • ৬.ক্লিম অর্গানিকস অ্যান্টি-এজিং ময়েশ্চারাইজার
  • ৭.দীর্ঘস্থায়ী ময়শ্চারাইজিং ক্রিম Hidr24 ক্রিম, পাইোট
  • ৮.ময়শ্চারাইজিং মাস্ক হাইড্রজেন মাস্ক, ল্যানকাম
  • ৯.ফার্স্ট এইড বিউটি আল্ট্রা মেরামত ক্রিম
  • ১০. ট্রুসকিনেরেটিনল ময়েশ্চারাইজার
  • ১১. লা রোশে-পসিয়েফিস ময়েশ্চারাইজার
  • ১২. খাঁটি বায়োলজি রেটিনল ময়েশ্চারাইজার
  • ১৩.আভেনোডেইলি ময়েশ্চারাইজার
  • ১৪. পিটার থমাস রথ হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার
  • ১৫. লা রোশে-পোজে সংবেদনশীল ত্বক ময়েশ্চারাইজার
  • ১৬.বিলাসবহুল পণ্য ভিটামিন সি ক্রিম
  • ১৭. সৎ সৌন্দর্যে প্রতিদিনের রেডিয়েন্স ময়েশ্চারাইজার

পরিশেষে: তো পাঠক বন্ধুরা, সবমিলিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আজ মূলত আমরা এখানে আলোচনা পর্বের ইতি টানছি। আবারো নতুন টপিকের নতুন কোন আলোচনায় আপনাদের সাথে কথা হবে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *