অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
| |

অনলাইনে ইনকাম করার উপায় ও জনপ্রিয় ওয়েবসাইট

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার প্রতি অনেকেরই ঝোঁক থাকে। নিজের হাতখরচ কিংবা পরিবারে আর্থিক সাহায্য করার মন-মানসিকতা থেকেই জন্ম নেই এই ধরণের আগ্রহ। কিন্তু সঠিক গাইডলাইনের অভাব প্রবল আগ্রহকে কোনোভাবেই সফল করতে পারে না। অনলাইনে টাকা ইনকাম করার অসংখ্য ওয়েবসাইট থাকলেও সঠিক তথ্য এবং টেকনিক না জানার কারণে অনেকেই ঝড়ে পড়ে। সেই কথা মাথায় রেখে আজ আমরা আয়োজন করেছি অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট সম্পর্কিত আর্টিকেল। আশা করি সাথেই থাকবেন এব্য নিজের প্ল্যাটফর্ম খুঁজে নিবেন। উল্লেখ্য যে আজ আমরা আলোচনা করবো বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট সম্পর্কে।

আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং

আমাজন সম্পর্কে আমরা সবাই জানি এবং মোটামুটি ধারণা রাখি। এটি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে প্রোডাক্ট সেল করা হয়। একজন অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হিসেবে আপনিও এখান থেকে বেশ ভালো পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমাজন ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট লিংক শেয়ার করতে হবে। বিভিন্ন বায়ারের কাছে প্রমোট করা প্রোডাক্ট লিংক পৌঁছে দিতে হবে।

বলে রাখা ভালো এমন কোনো প্রোডাক্ট পৃথিবীতে নেই যা আমাজনে সেল হয় না। যেহেতু মানুষের চাহিদা অনুযায়ী প্রায় সব প্রোডাক্টই এখানে পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু সেলিং নিয়ে আপনাকে খুবই একটা চিন্তা করতে হবে না। প্রতি প্রোডাক্ট সেল করার বিনিময়ে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পেয়ে যাবেন। ব্যাংক কিংবা পেওনিয়ারের মাধ্যমে সেই ডলারকে টাকাই কনভার্ট করে খুব ইজিলি বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পারবেন।

জে আইটি আর্নিং প্রোগ্রাম

এটি একটি বাংলাদেশী ওয়েবসাইট। যেখান থেকে মাসে বেশ ভালো পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করতে সক্ষম হচ্ছে ইউজারেরা। অনলাইন ইনকামের এই ব্লগসাইটটিতে আপনি নিজস্ব একটি প্রোফাইল তৈরি করে সেখানে নিয়মিত আর্টিকেল রাইট করে টাকা আয় করতে পারেন।

জে আইটি মূলত কন্টেন্ট রাইটার বা আর্টিকেল রাইটারদের সবচেয়ে সেরা ইনকাম সোর্স। যারা লোকাল ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করতে পারছেন না বা একেবারেই পাচ্ছেন তারা জে আইটিতে ট্রাই করতে পারেন। এছাড়াও যারা বড় বড় মার্কেটপ্লেসগুলিতে গিগ দিয়ে বসে আছেন কিন্তু ইনকাম হচ্ছে না তারা পার্ট টাইম রাইটিং ওয়ার্ক হিসেবে জে আইটিতে কাজ করতে পারেন। 

বিল্যান্সার ডট কম

এটিও একটি বাংলাদেশী ইনকাম সাইট। যেখানে বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিস সেল করা হয়। আপনি যদি অনলাইনের যেকেনো কাজ করে থাকেন বা ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড যেকেনো কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন তবে ইজিলি বিল্যান্সারে একাউন্ট খুলে কাজ শুরু করতে পারেন। যারা ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড কোনো কাজের সাথে এখনো জড়িতই হননি তারা সহজ কাজগুলি দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।

বিল্যান্সারে সাধারণত একাউন্ট ওপেন করে নিজের সার্ভিস রিলেটেড গিগ খুলতে হয়। বলতে গেলে এটি কিছুটা ফাইভারের মতো। বিভিন্ন আন্তজার্তিক মার্কেটপ্লেসে আমরা বাংলাদেশের মানুষ টাকা আয় করতে পারলেও দেশে সেই টাকা নিয়ে আসতে নতুনদের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে বিল্যান্সার হতে পারে সঠিক সময়ে সেরা উপাদান। তবে এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিল্যান্সার অনেক সময় খুব একটা পজেটিভ প্রভাব নাও ফেলতে পারে। বিশেষ করে চার্জ রেইট এবং সময়ের ক্ষেত্রে।

ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় 

ইউটিউব একটি ভিডিও শেয়ারিং অনলাইন ওয়েবসাইট এবং আপনি চাইলে এই ওয়েবসাইটকে কাজে লাগিয়েই ইনকাম করতে পারেন। এক্ষেত্রে ঘরে বসেই নিজের মতো করে নিজের সময়ে কাজটি করা সম্ভব। একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং প্রয়োজনীয় অডিয়েন্স আপনাকে এই আয়টা জেনারেট করতে সাহায্য করবে। 

ইউটিউব হতে ইনকাম করার আগে আপনাকে চ্যানেলের মনিটাইজেশন নিশ্চিত করতে হবে। যা মূলত গুগল এডসেন্সের আন্ডারে করা হয়ে থাকে। শুধু গুগল এডসেন্সই নয়! ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চাইলে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রমোশনাল মার্কেটিং ইত্যাদিরও সাহায্য নিতে পারেন। 

গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়

গুগল এডসেন্স হলো এমন একটি অনলাইন ওয়েবসাইট যার মাধ্যমে যে কেউ ইনকাম জেনারেট করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ে কোনো একটি মানসম্মত ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের। ভিজিটরের উপর ভিত্তি করে এই ওয়েবসাইটটি ইউজারদের পে করে থাকে। 

যারা কন্টেন্ট রাইটিং পছন্দ করেন, বিভিন্ন কোডিং এর সাহায্য টুলস ওয়েবসাইট তৈরি করতে পছন্দ করেন কিংবা যাদের ওয়েবসাইট তৈরি করে তা রান করার প্রতি প্রবল আগ্রহ রয়েছে তারা এই গুগল এডসেন্সকে কাজে লাগিয়ে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও ভিডিও কন্টেন্টের প্রতি যাদের ঝোঁক আছে তারাও ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে গুগল এডসেন্স ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। 

ফেসবুক থেকে টাকা আয়

ফেইসবুক এমন একটি ওয়েবসাইট যা আমরা নিয়মিত ব্যবহার করে থাকি। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে সময় কাটাতে ফেইসবুক ছাড়া যেনো অন্য কোনো মাধ্যম আমাদের চোখে পড়েই না। এই ফেইসবুক অনলাইন ওয়েবসাইট ব্যবহার করেও আপনি ঘরে বসে৷ বাড়তি আয় করতে পারেন। যা শুরু করতে খুব একটা ইনভেস্টমেন্টের প্রয়োজন পড়ে না। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের একটি বড় ক্ষেত্র হলো ফেইসবুক মার্কেটিং। প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার অডিয়েন্সের কাছে নিজের সেল করতে চাওয়া প্রোডাক্ট শেয়ার করে সেল নিয়ে আসতে পারেন। এছাড়াও যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার চিন্তা করছেন তারা ফেইসবুকের বড় বড় পেইজ কিংবা গ্রুপের সাহায্য নিয়ে সেল জেনারেট করতে পারেন। 

ফাইভার থেকে টাকা আয়

ফাইভার অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে বর্তমানে লক্ষ লক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন কাজ করে ঘরে বসে ইনকাম করছে। নিজের কাজের পাশাপাশি অথবা পড়ালেখার পাশাপাশি অবসর সময় কাজ করে ফাইভার অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে চাইলে যেকোনো একটি স্কিলে আপনাকে ফোকাস করতে হবে। 

Fiverr অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে আপনার দক্ষতার আলোকে নিজের মতো করে ইউনিক এবং প্রফেশনাল গিগ তৈরি করতে হবে। যখন আপনার দেওয়া সার্ভিসের পোর্টফোলিও কোনো বায়ারের পছন্দ হবে বা সেই সার্ভিসের প্রয়োজন পড়বে তখন তারা আপনাকে অর্ডার করবে। কাজ শেষে আপনার একাউন্টে রিভিউ এবং সে কাজের পেমেন্ট জমা হয়ে যাবে।

সহজ অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট

সহজ অ্যাফিলিয়েট হলো কমিশনভিত্তিক ইনকাম সোর্স। যা ঘরে বসে যেকেউ শুরু করতে পারে। বলে রাখা ভালো এখানে কাজ শুরু করতে কোনে টাকা পয়সা লাগেনা। একেবারে শূন্য হাতেই শুরু করতে পারেন আপনিও। তবে এতে দরকার পড়বে স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন। 

সহজ অ্যাফিলিয়েট হতে ইনকাম জেনারেট করতে হলে আপনার সাইট, ফেসবুক পেজ, গ্রুপ বা ইউটিউব চ্যানেলের ভিজিটরের প্রয়োজন পড়বে। পাশাপাশি আজীবন বাড়তি ১০% কমিশন আয় করতে চাইলে দরকার পড়বে তাদের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম ইনভাইটেশনের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে ইনকাম জেনারেট করতে কোনো সমস্যা হলে বা আপনার কোনো পয়েন্ট বুঝতে অসুবিধা হলে সহজ অ্যাফিলিয়েটের মেন্টর আপনাকে দেবে ফ্রীতেই দিক নির্দেশনা।

দারাজ থেকে আয়

বর্তমানে ডিজিটাল যুগে হাতে থাকা মোবাইল ফোন দ্বারাও ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব। এক্ষেত্রে দারাজ অনলাইন ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন আপনি। বাংলাদেশের এক নম্বর অনলাইন ই-কমার্স প্লাটফর্ম হলো এই দারাজ এবং এখান থেকে সবকিছুই সহজেই কেনাকাটা করতে পারবে যেকেউ। 

দারাজ অ্যাপ থেকে ইনকাম এর জন্য খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না আপনাকে। গুগল প্লে স্টোর থেকে দারাজ অ্যাপটি ডাউনলোড করে এতে থাকা প্রায় 10 মিলিয়নের বেশি পণ্যের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। প্রতিটা পণ্য বিক্রি করলে ৯% কমিশন পাওয়া যাবে। কোন প্রোডাক্ট/পণ্য নিয়ে কাজ করবেন সেটা ঠিক করে প্রোডাক্ট এর ছবি ও প্রোডাক্ট রিলেটেড কিছু কন্টেন্ট লিখে বিভিন্ন গ্রুপে ও আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে হবে। ফলস্বরূপ দ্রুত সেল জেনারেট হবে। 

ইতি কথা

আশা করি অনলাইন ইনকাম ওয়েবসাইট হতে কিভাবে টাকা আয় করতে হয় তা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। উপরোক্ত ওয়েবসাইটে নিজেদের দক্ষতা দিয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পূর্ণ করে টাকা আয় করুন আজে থেকেই!

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *