ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় ২০২৩
মর্ডান কম্পিউটার টেকনোলজি অনেক এগিয়ে গেছে আগের জামানা থেকে। এখনকার ল্যাপটপ কম্পিউটারের সার্ভিস আগের থেকে অনেক গুনে হেব্বি মাল্টি টেস্টিং করতে সক্ষম। কিন্তু দিনশেষে চার্জার কানেক্ট করতেই হবে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা পেতে। আমাদের আজকের পোস্টে কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলব, যেগুলো মেনে চললে আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি আগের চাইতে ভালো রাখতে পারবেন। এবং সেই সাথে চার্জ ব্যাকআপও ভালো পাবেন। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় গুলো কি কি।
১. ডিসপ্লের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখা।
ল্যাপটপের ডিসপ্লে হল সবচাইতে বেশি পাওয়ার হাংরি পার্ট। ব্রাইটনেস বাড়িয়ে স্ক্রিন উজ্জ্বল রাখতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পাওয়ার কনজিউম হয়। তাই আপনি যদি কাজের সময়ে ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ পেতে চান। এবং আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখতে চান, তাহলে কাজের সময়ে আপনার ল্যাপটপের ডিসপ্লের ব্রাইটনেস ২৫% অথবা ০% এ নামিয়ে রাখুন।
এতে করে আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি যেমন ভালো থাকবে ঠিক তেমনি করে আপনার কাজও হয়ে যাবে, সেই সাথে ব্যাটারীতে চার্জও কিছু থেকে যাবে, যা পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারবেন। এটাও কিন্তু আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় এর মধ্যে অন্যতম।
২. পাওয়ার সেটিংস পরিবর্তন করা।
আপনি যদি ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় জানতে চান, তবে এই উপায়টিও শিখে নিন- উইন্ডোজ ১০ এবং ১১ এ দারুন দারুন কিছু ফিচার রয়েছে যা আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার জন্য অত্যন্ত কাজে দিবে। উইন্ডোজ ১০ এবং ১১ এ আপনি আগের চাইতে বেশি কাস্টমাইজ করার সুযোগ পাবেন। ফলে আপনি আপনার সুবিধামতো পাওয়ার সেভিং অপশনটি অন করে দিতে পারবেন।
এছাড়াও অলস অবস্থায় পড়ে থাকা ল্যাপটপ বা মনিটর অফ অথবা স্লিপ মুডে রাখতে পারবেন। সব কাজের একটাই উদ্দেশ্য চার্জ ধরে রাখা এবং আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়।
৩. ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ টান অফ করা।
ইন্টারনেট সংযোগের সাথে কানেক্টেড না থাকা অবস্থায়, অনেকের ল্যাপটপে ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ এসব বন্ধ করা থাকে না। এই সেটিংস গুলো বেশ ভালো পরিমাণে ব্যাটারি ড্রেন করে থাকে এবং আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারির আয়ু কমাতে থাকে। তাই একান্তই ইন্টারনেট কিংবা নেটওয়ার্ককে কানেক্ট থাকা দরকার না হলে, ওয়াইফাই বন্ধ করে রাখাই উত্তম।
উইন্ডোজ ১০ এবং ১১ এ ওয়াইফাই অপশন ডিসলেক্ট করে দিলেই কাজ হয়ে যাবে। অযথা ব্যাটারি ড্রেন হবে না এবং আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারিটি ভালো থাকবে। ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় গুলোর মধ্যে এটাও কিন্তু দারুণ একটি উপায় হতে পারে আপনার জন্য।
৪. ল্যাপটপের সাথে লাগানো পেরিফেরালস গুলো কাজ শেষে খুলে রাখা।
ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় গুলোর মধ্যে এই উপায়টিও জেনে রাখুন, কাজে আসবে। আপাতত দৃষ্টিতে দেখলে অনেকেরই মনে হবে এই কাজে কি এমন ব্যাটারি ভালো রাখা যাবে? কিন্তু আসলেই এটি করলে ব্যাটারির আয়ু বৃদ্ধি পায়। কেননা পেরিফেরালস গুলো পাওয়ার সাপ্লাই দিতে হয় ল্যাপটপ থেকেই, হলে ব্যাটারির উপর একটা প্রেসার পড়া সাধারনই বটে। তাই কাজ শেষে সকল পেরিফেরালস খুলে রাখায় বুদ্ধিমানের কাজ, এতে কিছু চার্জ সেভিংও হয়ে গেল সাথে আপনার ব্যাটারি ও ভালো থাকলো।
৫. সারাদিন রাত চার্জার এর সাথে কানেক্ট করে রাখা যাবে না।
যদিও বা এখনকার ল্যাপটপগুলোতে লিথিয়াম আয়নের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এবং এদের সার্কিটে ওভার চার্জিং প্রটেকশন রয়েছে, যা সুরক্ষা দিবে। কিন্তু লম্বা সময় ধরে এ কাজ করা হলে, ব্যাটারি লাইফের ওপর নেগেটিভ প্রভাব পড়বেই আজ না হয় কাল। সেজন্যই এই কাজটি না করাই উচিত। এটাও কিন্তু একটি দুর্দান্ত কার্যকারী ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়।
ড্রোন ক্যামেরার দাম জানতে আরো পড়ুন
এছাড়া বেশ কয়েকটি কোম্পানির ল্যাপটপে এমন সার্ভিস রয়েছে যে, আপনি সারাদিন চার্জে লাগিয়ে রাখলেও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ হয়ে আর চার্জ গ্রহণ করবে না। সে ক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে ৮০% থেকে ৯০% ফুল চার্জ করার অপশন সিলেক্ট করা। ১০০% এর অপশন টা সিলেক্ট না করাই আপনার ব্যাটারির হেলথ এর জন্য ভালো।
৬. এসএসডি ব্যবহার করা।
এসএসডি ব্যবহার করেও আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখা সম্ভব। কারণ সলিড স্টেট ড্রাইভ, যা একাধারে ল্যাপটপের প্রসেসিং স্পিড বাড়াই এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ ও ঠিক রাখে। এমনকি আগের চাইতে অনেক কম পাওয়ার কনজিউম করে এই এসএসডি ব্যবহার করার কারণে। কেননা হার্ডডিক্সের মত এর ঘূর্ণ এর অপশন নেই। ফলে এটি চালাতে কম ওয়াটের দরকার হয়, যা ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখতে অনেক অংশেই ভূমিকা পালন করে।
অনেকেই এই সমস্ত বিষয় না জেনেই পুরনো বা ইউজড ল্যাপটপ কিনে থাকে, তাই একটা পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত এই বিষয়গুলো। তাই যারা পুরনো ল্যাপটপ কিনবেন ভাবছেন তারা পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় এই পোস্টটি দেখে নিতে পারেন।
৭. ইন্টার্নাল গ্রাফিক্স ব্যবহার করা।
সেটিংস থাকলে নরমাল কাজের সময় ইন্টিগ্রেটে গ্রাফিক্স অন করে এই কাজের সুবিধা নেওয়া উচিত। ইউটিলিটিতে এই সুবিধা খুঁজে দেখবেন যেন গেমিং, রেডারিং ইত্যাদির বাইরে Nvidia or AMD গ্রাফিক্স Chip যেন অফ থাকে। এর ফলশ্রুতিতে অল্প পাওয়ার কনজিউ এ চলে যাবে অনেকক্ষণ। Integrated graphics chip এর দ্বারা চালানোর ফলে দেখা গেছে আগের থেকে দ্বিগুণ পাওয়ার ব্যাকআপ পাওয়া যাচ্ছে, AMD কিংবা Nvidia ব্যবহার করার জন্যে। ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় গুলোর মধ্যে এটাও একটি কার্যকারী উপায় হতে পারে আপনার জন্য।
৮. মেমোরি ফ্রি রাখা।
সম্ভব হলে ল্যাপটপের বেশি মেমোরি ঢুকিয়ে রাখাই উচিত, এতে করে যেমন কাজের পরিধি বাড়বে, সেই সাথে আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ও ভালো থাকবে। ফলে আগের কাজের থেকে অনেক দ্রুত প্রসেস হবে, সেই সাথে ব্যাটারির ওপর ও প্রেসার কম পড়বে, ওই একই কাজের জন্য। রেম লাগিয়ে নিয়েও এই কাজটি করতে পারেন যদি আপনার মাদারবোর্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্লট খালি থাকে।
শেষ কথা
উপরের এই টিপস গুলো ফলো করলে আপনি খুব সহজে জানতে পারবেন ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় কি। সেই সাথে আপনার ল্যাপটপ কে বানিয়ে ফেলতে পারবেন সুপারফাস্ট এবং স্মুথ যা আপনার ল্যাপটপ ব্যবহারের এক্সপেরিয়েন্স দিবে অতুলনীয়। তাই অবশ্যই ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় গুলো জানতে উপরের টিপস গুলো ফলো করুন। এবং অবশ্যই একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় এই পোস্টটি দেখে নিতে পারেন।