মুখের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
| |

মাত্র ৭ দিনে মুখের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

অনলাইনে মুখের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় প্রায় সবাই খুজে থাকেন। কারন পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল ত্বক প্রতিটি ব্যক্তির সপ্ন, সে পুরুষ হোক কিংবা মহিলা। রুক্ষ, শুষ্ক চেহারার ত্বক কেউ পছন্দ করে না। মুখের কালো দাগ নিয়ে যখন আয়নার সামনে দাঁড়ানো হয় তখন নিজেকে নিজে চেনা কষ্ট হয়ে ওঠে। তখন মনে হয় যে এটা কি সত্যিই আমি? তখন মনে হয় যদি এক নিমিষেই কোনোভাবে দাগ দূর করতে পারতাম। কালো দাগ দূর করা খুব হতাশাজনক হতে পারে। যদিও মেকআপ কালো দাগগুলোকে আড়াল করতে পারে। তবে এটি স্থায়ী নয় অস্থায়ী। ত্বকে বিভিন্ন কারণে কালো দাগ হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময় ব্রণ থেকেই কালো দাগের সৃষ্টি হয়। তাছাড়াও আপনার ত্বকে মেলানিন নামক একটি রঙ্গক যখন বেশি উৎপন্ন হয়ে রঙ্গকটি যে রঙ দেয় তখন মুখে কালো দাগ সৃষ্টি হয়। এটিকে হাইপারপিগমেন্টেশন বলা হয়।

হাইপারপিগমেন্টেশনের কারণগুলো হলোঃ

  • সূর্যের আলো
  • বার্ধক্য
  • গর্ভাবস্থায় বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন।
  • অত্যাধিক পরিমাণে চুল পড়া
  • ব্রণ
  • ঘা বা চর্মরোগের কারণে মুখে কালো দাগ পড়ে।

মুখের কালো দাগ বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে দুর করা যায়। তবে খুব সহজেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের কালোদাগ বা ডার্কস্পট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রাকৃতিক উপাদানগুলো কালো দাগ দূর করতে দুর্দান্ত কার্যকারী। আপনি চাইলে ৭ দিনের মধ্যেই দাগ দূর করা সম্ভব। যদি খুবই জেদি দাগ হয় ২ সপ্তাহ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে মুখের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।

ঘরোয়া উপায়ে ব্ল্যাকহেডস দূর করার উপায় জানতে পড়ুনঃ

 

রাতারাতি মুখের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

পিম্পল বা ব্রণ যথেষ্ট খারাপ।যদিও পিম্পল বের হলে চলে যায় কিন্তু ব্রণের জেদি দাগ থেকেই যায়। ব্রণের দাগ বা মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। রাতারাতি মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যথেষ্ট। নিচে মুখের দাগ দূর করার জন্য কয়েকটি ঘরোয়া উপায় দেয়া হল। আপনি চাইলে এসব উপাদান ব্যবহার করতে পারেন।

 

১। আলুর রস ও বেসন

আলুর রস ও বেসন মুখের কালো দাগ দূর করার অন্যতম একটি উপায়। কাঁচা আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি,পটাশিয়াম ও খনিজ পদার্থ এবং অন্যান্য উজ্জ্বল উপাদান রয়েছে যা কালো দাগ ও ট্যানিং দূর করে। বেসন ত্বককে পরিষ্কার করে দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

প্রথমে একটি আলু ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর গ্রেটার অথবা ব্লেনডার দিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর চেপে রস বের করতে হবে।তারপর বেসনের সাথে আলুর রস যোগ করে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
আপনি চাইলে আলু গোলগোল করে কেটে ও দাগযুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন। আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। ৭ দিনের মধ্যে পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।

 

২। নারকেল তেল ও হলুদ

নারকেল তেল কালো দাগ দূর করতে খুবই ভাল কাজ করে। নারকেল তেল কালো দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। ত্বকের যেকোনো অভিযোগের জন্য হলুদ বহু পুরনো ঘরোয়া প্রতিকার। হলুদ সম্পর্কে শুধু আপনার দাদী নানীদের জিজ্ঞাসা করুন তাহলেই বুঝতে পারবেন হলুদের গুরুত্ব। হলুদে কারকিউমিন নামক রাসায়নিক রয়েছে যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দ্বারা মেলানিনকে সীমাবদ্ধ করে। এটি কালো দাগ কমাতে সাহায্য করে ত্বককে উজ্জ্বল করে।

নারকেল তেল ও হলুদ এর উপকারিতা

প্রথমে ২-৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল নিতে হবে। এরপর নারকেল তেলের সাথে ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর মুখে এই পেস্টটি লাগিয়ে নিতে পারেন অথবা কালো দাগের উপর শুধু লাগাতে পারেন। ২০-২৫ মিনিট পরে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি্দিন ব্যবহার
করলে আপনি নিজেই পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।

 

৩। অ্যালোভেরা ও লেবুর রস

অ্যালোভেরা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে পরিচিত। অ্যালোভেরার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি -ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যর কারণে ত্বকের ক্ষত নিরাময় করে এবং কালো দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ব্লিচ করে ত্বকের কালো দাগ দূর করতে খুবই কার্যকর।

প্রথমে অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে নিতে হবে অথবা মার্কেট থেকে অ্যালোভেরা জেল কিনে নিতে পারেন। পরিমাণমত অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া মেশাতে পারেন। তারপর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিদিন ব্যবহারে সাতদিনে মুখের দাগ গায়েব হয়ে যাবে।

 

৪। বাটারমিল্ক ও টমেটো

বাটারমিল্ক ল্যাকটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা ত্বকের মৃত চামড়া দূর করে। বাটারমিল্ক কালোদাগ দূর এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। টমেটো প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে যা কালো দাগ
দূর করে ও ত্বককে মসৃণ করে।

প্রথমে একটি বাঁটিতে ২ চামচ বাটারমিল্ক এবং ২ চামচ টমেটোর পেস্ট নিতে হবে। তারপর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। সাতদিনের মধ্যে আপনি পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

 

৫। মসুর ডাল ও মধু

মসুর ডালে প্রাকৃতিক বিচিং এজেন্ট যা ত্বকের কালো দাগ ও পিগমেনটশন দূর করে। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি- অক্সিডেনট যা ত্বককে ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষা করে। মসুর ডাল এবং মধু কালো দাগ দূর করার অন্যতম উপাদান। মধুর গুন সম্পর্কে কারো অজানা নয়। খাঁটি মধু ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বককে হাইড্রেড ও গ্লোয়িং করতে সাহায্য করে।

একটি বাঁটিতে পরিমানমত মসুর ডাল নিয়ে তাতে দুধ অথবা পানি দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিতে হবে তারপর ১চামচ মধু যোগ করতে হবে। তারপর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।

 

৬। লাল পেঁয়াজ ও পেঁপে

হ্যাঁ আমরাও আপনার মতই অবাক। যদিও লাল পেঁয়াজ আপনাকে কাঁদাতে পারে। কিন্তু ত্বকের যত্নে লাল পেয়াজ খুব উপকারী। পেয়াজের রস ত্বকের দাগ দূর করার জন্য খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। পেঁপেতে রয়েছে এনজাইম ও খনিজ উপাদান যা ত্বকের কালো দাগ দূর করে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

একটি বাটিতে ২ চামচ পেঁয়াজের রস ও ২ চামচ পাকা পেঁপে পেস্ট করে নিতে হবে। আপনি চাইলে সাথে ১ চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে পারেন। তারপর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। ত্বকের দাগ দূর করতে আপনি প্রতিদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

মুখের কালো দাগ থেকে মুক্তি পেতে এই প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকারগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর সেগুলো কতটা দুর্দান্ত কাজ করেছে সেগুলো আমাদের কে জানান। অন্য কোন টিপস জানতে চাইলে আমাদের কে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *