টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়
|

বাংলাদেশীদের জন্য টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়

টাকা হলো মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যেটি ছাড়া জীবনের অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা একেবারেই ফিঁকে হয় যায়। বর্তমানে অফলাইনে বিভিন্ন ধরণের কাজ পাওয়া যায়। সেই সাথে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনও উন্মোচন করছে কাজের নতুন নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় পরিবেশগত কারণে হয়তো আলাদা। এক্ষেত্রে আপনাদের সাথে সেই আপডেটেড এবং দেশীয় যে নিজস্ব কাজগুলি রয়েছে সে-সম্পর্কে আলোচনা করবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশের কিছু টিপস এবং ট্রিকস সম্পর্কে।

ব্যবসা করে টাকা ইনকাম করুন

অনেকেরই ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন থাকে নিজেকে একটি ব্যবসার সাথে জড়িয়ে ফেলার। আপনার যদি পর্যাপ্ত ইনভেস্টমেন্ট করার সুযোগ থাকে তবে ব্যবসা করুন। বসের ঝাড়ির চাইতে নিজের মতো করে একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারাটা বড্ড চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। কিন্তু এই কাজটা যে সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। 

বাংলাদেশে আপনার একাধিক ব্যবসা করার সুযোগ রয়েছে। তবে সেই ব্যবসা শুরুর আগে আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে আপনার আগ্রহের প্রতি। সবার আগে জেনে নিন এবং বুঝে নিন কোন কাজটি করতে আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাজ করলে আপনি খুব ভালো কিছু করে দেখাতে পারবেন। 

ব্যবসার ক্ষেত্র সিলেক্ট করে সরাসরি আপনাকে রিসার্চে নেমে পড়তে হবে। প্রয়োজনীয় রিসার্চে দরকার পড়বে বর্তমান বাজার-দর, গ্রাহকের চাহিদা, আপনার ইনভেস্টমেন্ট করতে পারার মতো ক্ষমতা ইত্যাদি! সবকিছু যদি খাপে খাপ মিলে যায় তবে দেরি না করে দ্রুত শুরু করে নিতে পারেন এই বিজনেস বা ব্যবসা হতে টাকা ইনকাম করার মিশন।

দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায় এবং সেরা কিছু টিপস

টিউশনি করে টাকা ইনকাম করুন

অনেকে স্টুডেন্ট পড়াতে ভালোবাসেন। ছোট্ট ছোট্ট এসব বাচ্চাদের পড়াতে খুবই ভালো লাগে অনেকের। অনেকের আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্থি পরীক্ষার টিপস সম্পর্কে ভালো আইডিয়া রয়েছে৷ যা অন্যান্য ভর্তিযোদ্ধাদের সাথে শেয়ার করতে চান। এই দলে থাকা মানুষগুলি সরাসরি টিউশনি করে টাকা ইনকাম শুরু করে দিতে পারেন। 

বলা হয়ে থাকে টিউশনি হলো এমন একটি পেশা যেখানে নিজের দক্ষতাটাও বাড়ে আবার ইনকামটাও জেনারেট হয়। আপনি বর্তমানে কিসে পড়ছেন বা আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু তা বিবেচনা করে অবিভাবকের চাহিদা খুঁজে বের করুন। তারা ধরণের টিউটর খুঁজছে তা নজরে আনুন। 

গ্রামের বড় ভাই বা বোন যারা ইতিমধ্যেই নামকরা টিউটর বনে গেছে তাদের সাহায্য নিন এবং নিজের আগ্রহের কথাটা জানিয়ে রাখুন। কেননা একটা সময় দেখা যায় এসব পরিচিত টিউটরদেরই সকল অবিভাবক একসাথে হায়ার করতে চায়। এক্ষেত্রে পরিচিত মানুষ হিসেবে আপনার ইচ্ছের কথাও জানাতে পারে তারা। এছাড়াও বিভিন্ন দেশীয় টিউশন অ্যাপ থেকে টিউশনির কাজ পেয়ে যেতে পারেন৷ 

আউটসোর্সিং করে টাকা ইনকাম করুন

বর্তমান ইনকাম করার পথ হিসেবে আউটসোর্সিং করে আয় করাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেননা কাজটি ঘরে বসেই করা যাচ্ছে এবং অফলাইন চাকুরির মতো বাড়তি ঝামেলাও এতে নেই। তবে এক্ষেত্রে যারা স্কিল ডেভেলপমেন্ট না করে সরাসরি মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করে ফেলে তাদের কপালে শনির দশা ছাড়া খুবই একটা ভালো ফলাফল থাকে না। 

আউটসোর্সিং সেক্টরে অনেক ধরণের কাজ করার সুযোগ পাবেন আপনি। আপনার মন যেদিকে টানে এবং যে সেক্টরে আপনার স্কিল রয়েছে বা ডেভলপ করার চেষ্টা করেন সেই সেক্টর দিয়েই শুরু করতে পারেন। ওয়েব ডেভলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইনিং, কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের কাজ রয়েছে এই সেক্টরে। 

আউটসোর্সিং করতে গেলে আপনাকে বিদেশীদের সাথে সরাসরি কন্টাক্ট করতে হবে এবং ম্যাসেজিং কিংবা কলে কথা বলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ইংরেজির উপর পাকাপোক্ত দখলদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কেননা বিদেশী ক্লায়েন্টের কাজ পড়ে গেলে ইংরেজিতে কথাবার্তা বলে তবেই কাজটি বুঝে নিতে হয়। যদিও আজকাল লোকাল ক্লায়েন্টেরও অভাব নেই। 

কোর্স করিয়ে টাকা ইনকাম করুন

মানুষ এক একটি কাজে নিজেদের বেশ দক্ষ করে তুলতে পারে। অনেকেই তো আবার একাধিক কাজে দক্ষ হয়ে উঠার যোগ্যতা রাখে। তবে এক্ষেত্রে প্রধাণতম একটি কাজ থাকে যে কাজটির উপর দক্ষতা এবং প্রবল আগ্রহ দু’টোই কাজ করে। আবার অন্যকে এই স্কিল ডেভলাপ করার কাজেও সাহায্য করবার মতো কনফিডেন্সও থাকে। 

এক্ষেত্রে সেই কাজটির উপর কোর্স করানো যেতে পারে। যার পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ চার্জ করতে পারে৷ বুটিক্সের কাজ, সেলাইয়ের কাজ, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, বেকিং রিলেটেড বিভিন্ন কোর্সের আয়োজন করতে পারেন। এসব কোর্স করতে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি চার্জ করতে পারেন। 

নিজের বাড়িতে বসে কিংবা কোনো একটি রুম বা হল ভাড়া নিয়েও কাজটি করা যায়। আপনার যদি ভালো শেখানোর মতো দক্ষতা থাকে এবং শিখিয়ে এক একজনকে সফল করতে পারেন তবে আপনার শিক্ষার্থীর পরিমাণ দিনদিন বাড়বে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লাসের জন্য দিনে ২/৩ ঘন্টা দিলেই যথেষ্ট। 

ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করুন

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিংকে যারা গুলিয়ে ফেলেন আর্টিকেলের এই সেক্টরটি তাদের জন্য। আউটসোর্সিং হলো অনলাইনে ঘরে বসে অন্যের কাজ করে দেওয়া। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং হলো ঘরে বসে অনলাইনে নিজের কাজ নিজে করে ইনকাম জেনারেট করা। 

এক্ষেত্রে ব্লগিং, ইউটিউবিং, অনলাইন বিজনেস করতে পারেন। যেখানে আপনি আপনার সেলার এবং আপনি আপনার বায়ার। মার্কেটপ্লেসে ঘুরে ঘুরে এই সেক্টরে কাজ খুঁজতে হবে না আপনাকে। আবার চাইলে কোনো ক্লায়েন্ট পেলে নির্দিষ্ট কাজটি সরাসরি করে চার্জও করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। তবে কাজটি আপনাকে সঠিকভাবে জানতে হবে এবং কিভাবে কাজটি ডেলিভারি করতে হবে সেটিও জানতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণটি হলো লেগে থাকার মন-মানসিকতা। পাশাপাশি এই সেক্টরে ঝুঁকি নিতে শিখতে হয় এবং ঝুঁকি নিতে হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি কাজটি শিখছেন এবং কাজটিকে একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারছেন না ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার পুরো শ্রমটার ঝুঁকি থাকেই। সুতরাং সাবধান! কাজে নেমে বিফল হয়ে কান্নাকাটি না করে সঠিকভাবে কাজ শিখে প্ল্যান করে কাজে নামতে পারলে এই সেক্টরটি হতে আপনার লাভজনক একটি ইনকাম সোর্স। 

প্রোডাক্ট ডেলিভারি টাকা ইনকাম করুন

অনলাইন বিজনেস আজকাল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠায় দরকার পড়ছে বিভিন্ন প্রোডাক্ট ডেলিভারি বয়ের। এক্ষেত্রে আপনিও এই কাজটি করে বেশ ভালো ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে-বেড়ানো যাদের ভালো লাগে, যারা ঘরে বসে বোর ফিল না করে বাইরে গিয়ে আর্ন করতে চান তাদের জন্য প্রোডাক্ট ডেলিভারির কাজটি পারফেক্টলি ম্যাচ করবে। 

অনলাইন বিজনেসের সাথে যারা জড়িত আপনি চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে নিজের চাহিদা এবং করণীয় সম্পর্কে ক্লিয়ার হয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন। আবার কারো অধীনে কাজ না করে কোনো কোম্পানির সাথে কাজ করতে চাইলে দারাজ, ফুডপান্ডা বা রেডেক্সের শরণাপন্ন হতে পারেন। 

ফুড ডেলিভারি করতে হলে আপনার নিজের একটি মোটরসাইকেল কিংবা সাইকেলের প্রয়োজন পড়বে। হাতে বেশ সময় থাকাটাও নিশ্চিত করতে হবে আপনাকে। দ্রুততার সাথে যদি ডেলিভারির কাজ সারতে পারেন তবে সেটি হতে পারে আপনার কাজের ক্ষেত্রে প্লাস-পয়েন্ট। এই কাজটি করতে আপনি দৈনিক ৪০০-৮০০/- পর্যন্ত চার্জ করতে পারেন। আর যাদের আত্মসম্মানবোধ বেশি তাদের জানিয়ে রাখা ভালো প্রোডাক্ট ডেলিভারির কাজ কোনো মানহীন কাজ নয়।

ইতি কথা

তো কেমন লাগলো আমাদের এই টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা? আশা করি ভালো লেগেছে এবং কিছুটা হলেও লেখাটি আপনার উপকারে এসেছে। পরবর্তী আর্টিকেল প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Similar Posts

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *