১ মিনিটে ঘুম আসার উপায় | জেনে নিন- রাতে ভালো ঘুমের উপায়
ঘুম মানুষের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ঘুমে অনিয়ম ঘটলে একজন স্বাভাবিক মানুষের নানা শারীরিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। কেননা একটি প্রাণের অর্থাৎ সে মানুষ হোক বা অন্য কোন প্রাণী, তাদের দৈহিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অবশ্যই ঘুম অপরিহার্য। একজন মানুষকে পর্যাপ্ত ও আরামদায়ক ঘুম সক্রিয় ও সতেজ করে তোলে।
সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো ঘুমের কোন বিকল্প নেই। আপনার যদি ঠিকঠাক ঘুম হয়ে থাকে তাহলে বলা যায়, আপনি একজন সুখী মানুষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষেরই ঘুমের সমস্যা। প্রায় মানুষের প্রশ্ন— কিভাবে ভাল ঘুম হয়, ভালো ঘুমের উপায় কি? ভালো ঘুমের জন্য করনীয় কি এবং ভালো ঘুম হওয়ার জন্য কি কি খাবার খাওয়া জরুরী।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনিও যদি সেই ঘুম না হওয়া মানুষদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তাহলে বলবো অবশ্যই আমাদের আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা ভালো ঘুমের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব আমাদের আজকের আর্টিকেলে। তাহলে আসুন শুরু করি।
আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যথা দূর করার উপায় | ৬০ সেকেন্ডে মাথাব্যথা দূর করবেন যেভাবে
আমাদের আজকের আলোচনায় আপনি যা যা পাচ্ছেন:
- ভালো ঘুমের উপায়
- ঘুম আসার সহজ উপায়
- এক মিনিটে ঘুম আসার উপায়
- ঘুম বৃদ্ধির উপায়
- ভালো ঘুমের জন্য খাবার
- ভালো ঘুমের সিরাপ
- ঘুম হওয়ার ঘরোয়া উপায়
- রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
- ঘুম না আসার কারণ
- রাতে ঘুম না হলে করণীয়
- রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
- ভালো ঘুমের জন্য মধ্যযুগের সাতটি উপায়
রাতে ভালো ঘুমের উপায়
যেহেতু শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয় ঘুম, তাই ভালো ঘুমের উপায় সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানাটা প্রয়োজন। কেননা এটা আমরা সবাই জানি ঘুম আমাদের ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেয় পাশাপাশি শরীরে সেরে ফেলে নানা জটিল কাজ। একজন মানুষ যদি নিয়মিত না ঘুমায় তাহলে তার মাঝে নানা জটিল রোগের আবির্ভাব ঘটবে এবং সে কখনোই স্বাভাবিক জীবনধারা বজায় রেখে চলতে পারবে না।
কিন্তু বর্তমানে মানুষ তাদের শরীরের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ঘুমাতে সক্ষম হন না। এর কারণ হিসেবে দায়ী করা যায় মোবাইল ফোন বা আধুনিক সময়কালকে। আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন যে, আজকাল মোবাইল ফোন নামক এই যন্ত্রটি মানুষের ঘুমকে কেড়ে নিয়েছে।
এখন ৯৯ শতাংশ মানুষ ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফোন টিপতেই থাকে। হ্যাঁ কিছু মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের কাজের জন্য ল্যাপটপ বা ফোন নিয়ে বসে থাকেন আবার কিছু মানুষ রয়েছে যারা শুধু শুধুই ল্যাপটপ বা ফোনের পেছনের সময় নষ্ট করেন। তবে কারণ বা উদ্দেশ্য যেটাই হয়ে থাকুক না কেন, আগে যে পরিমাণ মানুষ ঘুমানোর সময় পেতো বা যে সময়গুলোতে নিয়ম করে ঘুমাতো, এখন মানুষ একদমই তা করছে না।
তাইতো শরীরে দিনের পর দিন নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব ঘটছে। দেখুন মানব জীবনে মূলত আমাদের কাজ করতেই হবে। তবে এটা নয় যে আপনি শুধুমাত্র কাজ করবেন শরীরের কোন খেয়াল রাখবেন না। একটা বিষয় আপনাকে মানতে হবে যে আপনি যদি শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকেন তাহলে কখনোই আপনি কোন কাজ ফুলফিল ভাবে করতে পারবেন না। সুতরাং শরীরের দিকে নজর আপনাকে দিতেই হবে।
আর যেহেতু ঘুম আমাদের শরীরকে সুস্থতা দান করে তাই অবশ্যই সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমানো টা খুবই জরুরী। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা ভালো ঘুমের উপায় এবং বিভিন্ন ঘরোয়া টিপস এর পাশাপাশি জানাবো ঘুমের পরিমাণ ও ঘুমের সঠিক সময় সম্পর্কে।
ঘুমের পরিমাণ | কে কতটুকু ঘুমাতে পারবেন?
শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ঘুমানোর জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময় এবং পরিমাণ রয়েছে। আপনি যদি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই একজন বাচ্চা শিশুর সমপরিমাণে ঘুমাতে পারবেন না। তাহলে আসুন এ পর্যায়ে জেনে নেই বয়স ভেদে মানুষের ঘুমের সময়ের তারতম্য ঠিক কতটুকু।
* বয়স : ঘুমের চাহিদা (২৪ ঘণ্টায়)
* নবজাতক (০-৩ মাস) : ১৪-১৭ ঘণ্টা
* শিশু (৪-১২ মাস) : ১২-১৬ ঘণ্টা
* বাচ্চা (১-২ বছর) : ১১-১৪ ঘণ্টা
* প্রি-স্কুল (৩-৫ বছর) : ১০-১৩ ঘণ্টা
* স্কুল বয়সের শিশু (৬-১২ বছর) : ৯-১২ ঘণ্টা
* কিশোর (১৩-১৮ বছর) : ৮-১০ ঘণ্টা
* প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর) : প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা
* প্রাপ্তবয়স্ক (৬৫+ বছর) : প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা
ভালো ঘুমের জন্য মধ্যযুগের সাতটি উপায়
ভালো ঘুমের সহজ উপায় সমূহ সম্পর্কে জানানোর পূর্বে আমরা এ পর্যায়ে মধ্যযুগের বাছাইকৃত সবচেয়ে সেরা সাতটি উপায় সাজেস্ট করব। যেগুলো মেনে চললে আপনার ভালো ঘুম হবে তা ১০০% গ্যারান্টি। তাহলে আসুন জেনে নেই আপনি আধুনিক ব্যস্ত জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে কিভাবে সঠিক মাত্রায় ঘুমাবেন।
প্রথমত: মোবাইল ফোন সরিয়ে রাখুন এবং সুচ সুতো হাতে নিন।
মধ্যযুগে মানুষ মূলত সুই সুতো হাতে নিয়ে উলের কাপড় বুনতেন এবং সেই কাজ করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়তে এক সময়। ইতিমধ্যে আমরা আপনাদেরকে জানিয়েছি, সেই সাথে আপনারা নিজেরাও জানেন বর্তমান সময়ে ঘুমের ব্যাঘাতের অন্যতম কারণ হচ্ছে– মোবাইল ফোন। রাতে যদি বিছানাতে আমরা দশটার দিকে ঘুমাতে যাই, তাহলে মোবাইল ফোনে এদিক সেদিক ঘুরতেই বেজে যায় বারোটা, একটা, দুইটা অথবা তিনটা। যেটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ।
ডক্টর হেন্ডলি বলেছেন– টিউডর সময়ে যদিও মোবাইল ফোন অথবা টেলিভিশন ছিল না। কিন্তু তারা সেই সময় অন্য কোন কাজে সময় দিতো না। কখনো কখনো বিছানায় বসে বা বিছানার পাশে তারা প্রার্থনা করতো আর এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে যেত। তাদের মধ্যে আবার কিছু কিছু মহিলারা ছিলেন যারা ঘুমানোর আগে সুই সুতো বা হাতের কিছু কাজকর্ম করতে থাকত।
কেননা এই জাতীয় কাজ স্বাভাবিকভাবে মাথাকে ঠান্ডা করে এবং অনেকটাই ধ্যানের মত। তাই ভালো ঘুমের উপায় গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম হিসেবে বিবেচনায় ফেলেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা। আপনি যদি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে চান তাহলে এই কাজটি করুন অথবা যে কোন বই নিয়ে আপনি বিছানাতেই পড়তে বসুন। যে বা যারা ছাত্র জীবন পাড় করছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন,, বই নিয়ে পড়া মানে ঘুমের ঝিমুনি ভাব।
দ্বিতীয়তঃ মধ্যরাতে একবার জেগে উঠুন
এটা শুনে নিশ্চয়ই অনেকে অবাক হবেন। তবে অবাক হবার মতো কোনো কথা হলেও সত্যি যে আপনি যদি মধ্যরাতে একবার জেগে ওঠেন তাহলে আপনি অনেক ভালো মতন ঘুমাতে পারবেন। কেননা মধ্যরাতে একবার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া ভালো লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি। আর এটা মধ্যযুগেও ছিল বলে জানতে পেরেছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায় প্রাক শিল্প যুগে মানুষ দুই ভাবে ঘুমাতো। অনেকে মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে উঠে মোমের আলোয় বই পড়ত বা চাঁদের আলোয় হাটাহাটি করত। এরপর আবারও ঘুমিয়ে পড়তো। সুতরাং আপনার যদি রাত একটা দুইটা নাগাদ হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে যায় তাহলে এটা খারাপ কোন লক্ষণ নয়। কিছুক্ষণ রিলাক্স করুন এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে যান।
তৃতীয়ত: ভালো ভালো পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
মধ্যযুগীয় সময়ে মানুষ এটা বিশ্বাস করত যে ভালো ঘুমের জন্য ভালো ভালো পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াটা জরুরী। তাই তারা অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে সর্বদা শরীরের জন্য উপকারে এবং ঘুমের জন্য ভালো এমন খাবার খেতো। বিশেষ করে শসা। তবে ইতিহাস থেকে জানা যায় তাদের কারো কারো মধ্যে খানিকটা অপিয়াম খাওয়ারও প্রবণতা ছিল। তাই আপনি যদি ভাল ঘুমের উপায় অবলম্বন করতে চান তাহলে ভালো ভালো পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খান।
চতুর্থত: ব্যক্তিগত শোবার রুমের চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন।
আজকাল আমাদের মাঝে নিজস্ব অর্থাৎ আলাদা কক্ষে ঘুমানো টা অভ্যাস বা ফ্যাশন বলতে পারেন। আর এই অভ্যাসটা পরিবর্তন করুন। ভালো ঘুমের অন্যতম উপায় গুলোর মধ্যে এটিও একটি। আপনার যখন যেখানে ইচ্ছা আপনি যেখানে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন সেখানেই ঘুমাতে পারেন। সব সময় শুধুমাত্র স্বয়ংকক্ষে আপনাকে ঘুমাতে হবে এমনটা নয়।
মধ্যযুগীয় মানুষগুলো এমনটাই করতেন বলে জানা যায় এবং এ সম্পর্কে চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরাও একই মতামত প্রকাশ করেছেন।
পঞ্চমত: বিছানার কাছে গোবর রাখা।
এটা শুনে নিশ্চয়ই অনেকে হাসবেন আবার অনেকেই নাক ছিটকাবেন। তবে যেহেতু অনেকগুলো উপায় রয়েছে, তাই আপনি এটাকে এভোয়েড করতেই পারেন। তবে মধ্যযুগের ঘুমের ধরন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ ডক্টর হান্ডলি জানতে পারেন, সে সময়ের মানুষ পোকামাকড়ের কামড়ের ব্যাপারে খুব সচেতন ছিলেন।
প্রকারের কামড় থেকে নিজেকে বাঁচাতে অনেকে গোলাপের তেল শরীরে মাখতেন। আবার কিছু মানুষ যারা গ্রামে বসবাস করতেন, তারা বিছানার কাছে অথবা পায়ের দিকে গরুর শুকনো গোবর বেঁধে রাখতেন যাতে পোকামাকড় তাদের শরীরে না এসে সেদিকে যায়।
ষষ্ঠমত: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
আমরা এমন অনেকেই রয়েছি যারা কিনা সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটনি খেতেও বিশ্রাম নেওয়ার কথা ভুলে যাই। জীবনে কাজ করতেই হবে তাই বলে এটা ভুলে গেলে চলবে না জীবন একটা আর আপনাকে সুস্থভাবে বাঁচতে হলে অবশ্যই শরীরের দিকে নজর রাখতে হবে। আর শরীরের দিকে নজর দিলে আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত বিশ্রামও নিতে হবে।
জানা যায় আধুনিক যুগের তুলনায় সেই সময়ের মানুষরা তাদের বিশ্রামের ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন। আর তারা ঘুমের প্রস্তুতির জন্য অনেক সময় ব্যয় করতেন। নিজেদেরকে সব ধরনের কাছ থেকে আস্তে আস্তে গুটিয়ে নিতেন এবং শুধুমাত্র ঘুমের দিকেই মনোযোগ দিতেন। ঘুমাতে গিয়ে তারা আমাদের মত সব চিন্তা মাথায় আনতেন না বরং ঘুমের সময় ঘুম, কাজের সময় কাজ এবং চিন্তার সময় চিন্তা করতেন।
সপ্তমত: বাচ্চাদের মতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
মধ্যপ্রাচ্যের উপায় গুলোর মধ্যে ভালো ঘুমের অন্যতম আরেকটি উপায় হল বাচ্চাদের মতো ঘুমানোর চেষ্টা করা। আমরা বড়রা সাধারণত নিজেদের কাজ নিয়ে অধিক বেশি ব্যস্ত। এমন অনেকেই আছি যারা লেখালেখি করতে পছন্দ করি তাই ঘুমের আগে লেখালেখি করতে বসি, কেউবা রেস্তোরায় বা চা স্টলে সময় কাটাই।
মূলত নিজেদের এইসব কাজ বন্ধ করে বাচ্চাদের মত চিন্তাবিহীন মানুষ হয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ হান্ডলী পরামর্শ দিচ্ছেন শিশুরা যেভাবে ঘুমায় সবার উচিত এই ঘুমের সময়টাকে সেভাবেই ব্যবহার করা। তাই এ বিষয়টির দিকেও নজর রাখুন।
১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
আপনি যদি বিছানায় শোবার সাথে সাথে ঘুমাতে চান তাহলে আমাদের বলা কথাগুলো মাথায় রাখুন। তাহলে আপনি মাত্র এক অথবা দুই মিনিটের মধ্যে গভীর ঘুমে মগ্ন হতে পারবেন। তাহলে আসুন তা জেনে নেই।
প্রথমত: রাত দশটার মধ্যে বিছানায় অবস্থান করুন।
দ্বিতীয়তঃ হাতের ফোনটি আপনার হাতের নাগালের বাইরে রাখুন। যেখান থেকে আপনি ধরতে বা ছুঁতে পারবেন না।
তৃতীয়ত: ডান কাঁত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
চতুর্থত: আস্তে আস্তে কোন ভালো দোয়া বা সূরা পাঠ করুন অথবা মহান আল্লাহ তায়ালার নামে জিকির করুন।
ব্যাস এটুকুই, কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার চোখে ঘুম এসে যাবে। কেননা সকল প্রকার জাগতিক কাজকর্ম থেকে যদি আপনি নিজেকে সরিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে অবশ্যই কোন চিন্তা আপনাকে ছুঁতে পারবেনা এবং আপনি নিশ্চিন্তে গভীর ঘুমে মগ্ন হতে পারবেন।
ভালো ঘুমের জন্য করনীয় | ঘুম বৃদ্ধির উপায়
শরীর ও মন ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই ভালো ঘুমের জন্য আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যদি ঘুমের সমস্যা থেকে বাঁচতে চান এবং ঘুম বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ঘুম বৃদ্ধির এই উপায় গুলো মাথায় রাখুন। আশা করা যায় আপনি যদি এ বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন এবং আপনার ঘুম নিয়ে কোন প্রকারের সমস্যা হবে না।
সেগুলো হলো:
- ঘুমের আগে ভারী খাবার না খেয়ে সবসময় হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। মাথায় রেখে ঘুমানোর কয়েক ঘন্টা আগে খাবার খান।
- ঘুমানোর ঘর সবসময় নিঃশব্দ, অল্প অন্ধকার ও তাপমাত্রা অনুকূলে রাখার চেষ্টা করুন।
- ঘুমানোর জন্য বিছানা বালিশ সর্বদা পরিষ্কার রাখুন।
- যদি সম্ভব হয় তাহলে ঘুমের আগে হালকা উষ্ণ পানিতে স্নান করতে পারেন। এতেও বেশ ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় বলে গবেষণায় প্রমাণিত।
- যদি ঘুমের সমস্যা থেকে থাকে আপনার তাহলে দিনের বেলা না ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কেননা দিনের ঘুমের চাইতে রাতের ঘুম আপনার শরীরের জন্য অধিক বেশি জরুরি।
- অনেকেই রয়েছেন যারা দিনের বেলা ভাত ঘুমের পরিবর্তে গভীর ঘুমে মগ্ন হন। এটা একদমই শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই চেষ্টা করুন দিনের বেলা ২০ মিনিটের বেশি না ঘুমানোর। বড়জোর আধাঘন্টা অথবা ৪০ মিনিট ঘুমাতে পারেন। নয়তো না।
- সম্ভব হলে প্রতিদিন ঘরের বাইরে কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন।
- চেষ্টা করুন নেশাজাতীয় বদ অভ্যাস গুলো দ্রুত পরিত্যাগ করতে। কেননা মদ, সিগারেট ও অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
- মানসিক শান্তিতে থাকার চেষ্টা করুন, সমস্যাকে সব সময় গ্রহণ করার চেষ্টা করুন মানসিক চাপে না থেকে নিজেকে ফুরফুরে মাইন্ডে রাখুন।
মাথায় রাখুন আপনার জীবন ছোট্ট, আর ছোট এই জীবনে আপনার সমস্যা আসবে তার সমাধানও হবে। সুতরাং আপনাকে সব কিছু মিলিয়ে ভালো থাকতে হবে এবং ভালোভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার
আপনি যদি শান্তিতে ঘুমাতে চান তাহলে প্রতিদিন ঠিকঠাক ভাবে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কেননা ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো ঘুমের জন্য বেশ কিছু খাবার সাজেস্ট করেছেন, যা এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে জানাবো। তাহলে আসুন জেনে নেই ভালো ঘুমের জন্য কোন খাবারগুলো সবচেয়ে উপযুক্ত!
ভালো ঘুমের খাবার:
- গরম দুধ
- ডিম
- মিষ্টি আলু
- পাকা কলা
- মধু
- লেটুস পাতা
- আখরোট
- কাঠবাদাম
- সবজির সুপ
- আপেল
- কিসমিস
- বেদানা সহ প্রভৃতি।
তাই সর্বদা চেষ্টা করুন রাতে ঘুমানোর পূর্বে এই খাবারগুলো খাওয়ার।
ঘুমের ওষুধের জেনেটিক নাম | ভালো ঘুমের সিরাপ ও ট্যাবলেট ওষুধ
ভালো ঘুম হওয়ার জন্য অসংখ্য ঔষধ রয়েছে। তাই আমাদের দেওয়া এই টিপসগুলো অনুসরণ করার পরবর্তীতেও যদি আপনি ঘুমের সমস্যায় ভোগেন তাহলে ঔষধ সেবন করতে পারেন। ঘুমের ঔষধের জেনেরিক নাম জানলে আপনি ঐ গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ঔষধ কিনতে পারবেন। তবে হ্যাঁ, যেকোনো ওষুধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা অধিক বেশি জরুরী। তাই ভালো ঘুম না হলে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন অতঃপর সেবন করুন নিচের জেনেরিক এর ঔষধ গুলো। যথা:
- ক্লোনাজেপাম
- ডায়াজেপাম
- এলপ্রাজোলাম
- এমিট্রিপটাইলিন
- ব্রোমাজেপাম
- বুসপিরন
- ক্লোরডায়াজেপক্সাইড
- ক্লোরপোমাজিন হাইড্রক্লোরাইড
- ক্লোবাজাম
- ক্লোনিডাইন হাইড্রক্লোরাইড
- কিটোটিফেন
পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ভালো ঘুমের উপায় সম্পর্কিত আমাদের আজকের আলোচনা পর্ব এখানেই শেষ করছি। তো যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানান এবং নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল পেতে আমাদের daily smart tips ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।