চুলকানি দূর করার সহজ উপায়
|

চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন

চুলকানি একটি ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত অপরিষ্কার পরিবেশ পরিষ্কার অথবা নোংরা পরিবেশে থাকলে চুলকানি হয়। চুলকানি হলো ত্বকের একটি জ্বালা যা ঘামাচি করার তাগিদ দেয়। চুলকানি এমন একটি সমস্যা যা প্রত্যেকটি অনুভব করে যা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে। চুলকানি ইংরেজি শব্দ (itchy)চুলকানি প্রুরিটাস নামে পরিচিত। চুলকানি দূর করার বিভিন্ন সহজ উপায় রয়েছে। চুলকানি হচ্ছে একটি অস্বস্তিকর, বিরক্তিকর সংবেদন যা আপনার ত্বককে স্ক্রাচ করতে চায়। বেশিরভাগ চুলকানির শুষ্ক ত্বকের কারণে চুলকানি দেখা যায়। এটি বয়স্ক, প্রাপ্তবয়স্ক মধ্যে সাধারণ কারণ যা বয়সের সাথে সাথে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় তখন ত্বকে চুলকানি দেখা দেয়। ত্বকে চুলকানি দেখা দিলে আপনার ত্বক স্বাভাবিক লাল এবং রুক্ষ বা খসখসে হতে পারে। যদি চুলকানি ছয় সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তাহলে এটি দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি হিসেবে বিবেচিত হয়।

 

চুলকানির কারণ?

চুলকানি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে চুলকানি একেক জনের একেক রকম হতে পারে কিন্তু চুলকানি বিভিন্ন ধরন রয়েছে। সব চুলকানি একরকম নয়। যেমন দাদ, ফুসকুড়ি, ঘামাছি, অ্যালার্জি এরকম অনেক ধরন রয়েছে। চুলকানি কিভাবে হতে পারে এখানে কিছু কারণ দেয়া হলো।

যেমনঃ

  • এলার্জি প্রতিক্রিয়া থেকে
  • কিছু খাবার থেকে চুলকানি হতে পারে
  • পোকামাকড়ের থেকে কামড় থেকে
  • কিছু ওষুধ থেকে চুলকানি হতে পারে
  • রাসায়নিক প্রসাধনীর কারণে
  • গর্ভাবস্থায় সময়
  • লিভার কিডনি বা থাইরয়েডের কারণে
  • ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য
  • শুষ্ক ত্বকের জন্য
  • অতিরিক্ত সূর্যের তাপ লাগলে ত্বকে চুলকানি দেখা যায়

 

চুলকানি দূর করার উপায়

বাড়িতে বসে খুব সহজে চুলকানি দূর করা যায়। চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে। ত্বকের চুলকানি সাধারণত কিছু গুরুতর কিছুর লক্ষণ নয়। আপনি এটি বাড়িতে বসেই চিকিৎসা করতে পারবেন এবং সাধারণত কয়েক সপ্তাহ পরে চলে যাবে। চুলকানি খুবই বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর একটি রোগ যা ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় চুলকাতে হয় বা স্ক্রাচ করতে হয়। প্রাকৃতিক উপাদানের কিছু চুলকানির ওষুধ রয়েছে যা দিয়ে খুব সহজেই চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। নিচে চুলকানি দূর করার কিছু টিপস দেয়া হলোঃ

 

ত্বকে ঠান্ডা প্রয়োগ করা

ত্বক থেকে চুলকানি প্রশমিত করতে হলে অবশ্যই ঠান্ডা প্রয়োগ করতে হবে। যে স্থানগুলোতে চুলকানি হয় বা চুলকায় সে স্থানগুলোতে ঠান্ডা, ভেজা কাপড় বা বরফের কোন প্যাক লাগাতে হবে। এটি প্রায় 5 থেকে 10 মিনিট পর্যন্ত রাখতে পারেন। তাহলে দেখবেন খুব কম সময়ে আপনার চুলকানি কমে যাবে। 

 

ওটমিল স্নান বা গোসল

ওটমিল স্নান বা গোসল চুলকানির জন্য এটি খুব প্রশান্তিদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে চিকেন পক্স, আমবাত, রোদে পোড়ার জন্য ফুসকুড়ি ইত্যাদি। যদি আপনার চুলকানি হয় তাহলে কুসুম গরম পানির সাথে পরিমাণমতো ওটমিল অথবা ওটমিলের গুড়ো পানিতে মিশিয়ে গোসল করুন। তাহলে দেখবেন খুবই তাড়াতাড়ি চুলকানি কমে যাবে। 

 

ত্বক ময়েশ্চারাইজ করুন

শুষ্ক ত্বকে চুলকানির সমস্যা বেশি দেখা যায়। এজন্য ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে হবে। কিন্তু চুলকানিযুক্ত ত্বকে অবশ্যই সুগন্ধি মুক্ত বা পারফিউম মুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। যদি আপনি সুগন্ধিযুক্ত মশ্চারাইজার ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলকানি সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। এজন্য অবশ্যই সুগন্ধি মুক্ত মশ্চারাইজ ব্যবহার করতে হবে এতে চুলকানি দূর হবে। 

 

মেন্থল বা কুলিং এজেন্ট প্রয়োগ

চুলকানি যুক্ত ত্বকে মেন্থল বা কুলিং এজেন্ট প্রশান্তি দিতে পারে। এজন্য আপনার ত্বকের লোশন বা মশ্চারাইজার মেন্থল যুক্ত নিতে পারেন অথবা রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে পারেন। এতে চুলকানির সমস্যা দ্রুত দূর হবে। 

 

নিম পাতা

নিমপাতা ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। চুলকানির চিকিৎসা নিম পাতা খুবই উপকারী। নিম পাতার ত্বকের বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস করে দেয়। নিমপাতা বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা যায় আপনি যেকোন ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।নিম পাতা পানিতে সেদ্ধ করলে সে পানি দিয়ে গোসল করলে অথবা নিমপাতার পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন এবং নিম পাতার তেল ব্যবহার করতে পারেন।এতে চুলকানি খুবই দ্রুত কমে যাবে। 

 

নারিকেল তেল অথবা জলপাই তেল

চুলকানির চিকিৎসায় নারিকেল তেল অথবা জলপাই তেল খুবই উপকারী।চুলকানিযুক্ত স্থানে এই তেল লাগালে চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এজন্য অবশ্যই নারকেল তেল অথবা জলপাই তেল চুলকানি হলে ব্যবহার করা যেতে পারে। 

 

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেলের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল খুবই উপকারী। চুলকানির জন্য খুবই কার্যকরী একটি জেল।আক্রান্ত স্থানে প্রাকৃতিক এই যে লাগালে চুলকানি থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। 

 

লেবু এবং বেকিং সোডা

চুলকানি হলে অবশ্যই প্রতিদিন গোসলে হালকা গরম পানিতে বেকিং সোডা এবং লেবুর রস মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। কারণ এই দুটি উপাদান চুলকানি কমাতে খুবই কার্যকর। কারণ লেবুতে ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে যা ত্বকের জীবাণু ধ্বংস করে দেয় এবং চুলকানি খুব দ্রুত কমিয়ে ফেলে। 

 

পর্যাপ্ত পানি পান

শরীরটা শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কারণ শরীর অতিরিক্ত শুষ্ক হলে চুলকানির সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। 

 

ঢিলেঢালা সুতি কাপড় পরুন 

সিনথেটিক, উল এসব কাপড়ের শরীরে চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য অবশ্যই চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে হলে ঢিলেঢালা সুতি কাপড় পড়তে হবে। তাহলে অবশ্যই চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। 

 

 অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড

চুলকানির জন্য অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড খুবই কার্যকর সেটি হতে পারে ডেটল অথবা স্যাভলন। প্রতিদিন গোসলের সময় তিন থেকে চার ফোঁটা অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন অথবা কাপড় ধোয়ার সময় পানিতে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলকানির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। 

 

মানসিক চাপ হ্রাস করুন

অতিরিক্ত মানসিক চাপ আপনার চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারে। এজন্য মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে কোনো দুশ্চিন্তা করা যাবে না। মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকলে দ্রুত চুলকানি সমস্যা দূর হবে।

তবে স্ক্রাচিং থেকে দূরে থাকবেন কারন স্ক্রাচিং হল এমন যত স্ক্র্যাচ করবেন বা চুলকাবেন ততবেশি চুলকাবে। এজন্য স্ক্রাচিং থেকে বিরত থাকুন। এসব ঘরোয়া উপায়ে যদি আপনার চুলকানির সমস্যা ভালো না হয় এবং ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে এবং ঔষধ সেবন করতে হবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চুলকানি থাকলেঅথবা ফুসকুড়ি, দাদ অতিরিক্ত চুলকাতে থাকলে সেখানে ঘা সৃষ্টি হবে। এজন্য যখন দেখবেন ঘরোয়া উপায়ে চুলকানি ভালো হচ্ছে না তখন অবশ্যই ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *