ব্যাথা ছাড়াই অবাঞ্ছিত লোম দূর করার উপায়
মহিলাদের মুখের অবাঞ্ছিত লোম কম বেশি প্রায় সবারই থাকে। মেয়েদের এই অবাঞ্ছিত লোমের কারণে বিব্রতিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। কারণ অনেক মেয়েদের এই অবাঞ্ছিত লোম বড় বড় এবং অনেক ঘন হয়। এই অবাঞ্ছিত লোম বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে। যেমন, জেনেটিক্সের কারণে , হরমোন পরিবর্তনের সময়, বিভিন্ন রোগের কারণে, এবং মেনপজের সময় অবাঞ্ছিত লোম হয়ে থাকে। অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে এখন অনেকেই গাদা গাদা টাকা খরচ করে পার্লার গিয়ে লেজার ট্রিটমেন্ট নিচ্ছে। তাছাড়া শেভিং,ওয়াক্সিং,হেয়ার রিমোভার ক্রিম, দ্বারা অবাঞ্ছিত লোম দূর করা যায়। ওয়াক্সিং করলে প্রচণ্ড ব্যাথা লাগে।
তাই স্টপ শেভিং, ওয়াক্সিং!! কারণ ব্যাথা ছাড়াই অবাঞ্ছিত লোম দূর করার সহজ উপায় রয়েছে। যাদের পার্লারে যাওয়ার সময় নাই কিংবা গাদা গাদা টাকা খরচ করতে চান না, ব্যাথা ছাড়ায় অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে চায়। তাদের জন্য অল্প খরচে বাসায় বসে ঘরোয়া উপকরনে অবাঞ্ছিত লোম থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অবাঞ্ছিত লোম দূর করার উপায়
শরীরের অন্যান্য অংশের লোমের তুলনায় মুখের লোম খুবই দৃশ্যমান দেখায়। যা আপনার চেহারাকে বাজে করে তোলে। মুখের কিংবা শরীরের অবাঞ্ছিত লোম থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া প্রতিকারগুলোকে সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ বলে মনে করা হয়। ঘরোয়া প্রতিকারগুলো অবাঞ্ছিত লোমের স্থায়ী বা এমনকি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হতে পারে। নিচে অবাঞ্ছিত লোম দূর করার উপায়গুলো দেয়া হল।
টিপস ১ঃ
প্রথমে ফ্রেশ একটি বড় আদা নিতে হবে। তারপর আদাটি ভালোভাবে ধুয়ে ছিলে নিতে হবে। আদাটি গ্রেটার অথবা ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর ছাঁকনিতে চামচের সাহায্যে চেপে রস বের করে নিতে হবে।
তারপর একটি বাটিতে আদার রসের সাথে ১ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ,১ চামচ লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর কটন প্যাড অথবা তুলোর বল নিয়ে আদার রসে ভিজিয়ে নিয়ে অবাঞ্ছিত লোমের উপরে লাগাতে হবে ভালোভাবে ১ মিনিট ধরে। তারপর ১৫ মিনিট পর কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি প্রথম বার ব্যবহারে কিছুদিন পর পাতলা করে লোম গজাবে।
কিন্তু পরবর্তীতে আবারও ব্যবহার এর পর ধীরে ধীরে অবাঞ্ছিত লোম ওঠা একে বারে বন্ধ হয়ে যাবে।
টিপস ২ঃ
একটি বাটিতে ১চামচ ময়দা/ আটা , ১ টেবিল চামচ আদার রস,১ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ পেস্ট পেপসুডেনট \ কোলগেট দিয়ে সব উপাদান ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি একটু ঘন হবে।
তারপর অবাঞ্ছিত লোমের উপরে ঘন করে লাগাতে হবে। তারপর ১০/১৫ মিনিট পর দেখবেন লোম সব উঠে আসতিছে তখন মোটা তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। এরপর খুবই পাতলা করে লোম গজাবে কিন্তু তখন কোনভাবেই রেজার ব্যবহার করা যাবে না। পরবর্তীতে অবশ্যই এই পদ্ধতিই ব্যবহার করতে হবে তাহলে অবশ্যই অবাঞ্ছিত লোম ওঠা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
কোকাকোলা দিয়ে অবাঞ্ছিত লোম দূর করার উপায়
টিপস ১ঃ
প্রথমে একটি বাটিতে ৪ চামচ কোঁকাকোলা তারপর ১ চামচ বেকিংসোডা দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।তারপর ১চামচ সাদা ভিনেগার দিয়ে ও ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। আরও ২চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর কটন প্যাড অথবা তুলোর বলে এই মিশ্রনে ভিজিয়ে অবাঞ্ছিত লোমের উপরে ২মিনিট ধরে লাগাতে হবে। তারপর ২ঘণ্টা পরে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিতে হবে।
টিপস ২ঃ
প্রথমে একটি বাটিতে ১চামচ আটা/ ময়দা ,১চামচ কোঁকাকোলা দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ১চামচ লেবুর রস, ১চামচ পেস্ট এবং ১চামচ সাদা ভিনেগার দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এই প্যাকটি অবাঞ্ছিত লোমের উপরে ঘন করে লাগাতে হবে। ১০ মিনিট পরে ভালভাবে মুছে নিতে হবে।
লবঙ্গ দিয়ে অবাঞ্ছিত লোম দূর করার উপায়
টিপস ১ঃ
একটি পাতিলে ১/২ কাপ পানি দিয়ে তাতে ২ চামচ লবঙ্গ দিয়ে ফুটিয়ে পানিটি অল্প করে নিতে হবে। লবঙ্গর পানিটি ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর ২ চামচ পানি অন্য একটি বাটিতে রেখে দিতে হবে। ২ চামচ লবঙ্গর পানি আলাদা রাখার পর যেটুকু লবঙ্গর পানি রয়েছে তাতে ১চামচ লবন দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ২চামচ সাদা ভিনেগার দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর কটন প্যাড অথবা তুলোর বল এই মিশ্রনে ভিজিয়ে ১ মিনিট ধরে অবাঞ্ছিত লোমের উপরে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে।তারপর ২ ঘণ্টা পরে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
টিপস ২ঃ
একটি বাটিতে ১ চামচ আটা/ ময়দা, ২ চামচ লেবুর রস, আলাদা করে রাখা ২ চামচ লবঙ্গর পানি, ২ চামচ পেস্ট নিয়ে ঘন করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর অবাঞ্ছিত লোমের উপরে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর ১০/ ১৫ মিনিট পরে তোয়ালে দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এভাবে প্রতিবার ব্যবহার করতে হবে তাহলে হেয়ার গ্রোথ অনেক কমে যাবে এবং ধীরে ধীরে অবাঞ্ছিত লোম ওঠা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য এখানে থেকে আপনার যেই টিপসটি পছন্দ সেই টিপসটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই এই টিপসগুলো ব্যবহার করলে পরবর্তীতে কোন রেজার অথবা রিমোভার ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না। এতে লোমের গ্রোথ বেড়ে যাবে তাই এই টিপস ব্যবহার করতে হবে এতে অবাঞ্ছিত লোম কম হবে এবং ধীরে ধীরে অবাঞ্ছিত লোম ওঠা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।